ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্টের ঝুঁকিতে টিউলিপ সিদ্দিক, আত্মসমর্পণের নির্দেশ আদালতের

নিউজ ডেস্ক

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্টের মুখে পড়তে পারেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল–এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের মধ্যে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ না করলে এই সতর্কতা জারি হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এই লেবার পার্টির এমপির বিরুদ্ধে রবিবার ঢাকার একটি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২৭ এপ্রিলের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করতে হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক সিনিয়র কর্মকর্তা ডেইলি মেইলকে জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক আদালতে হাজির না হলে, ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হবে। তিনি বলেন, “যদি টিউলিপ আত্মসমর্পণ না করেন, তাহলে বাংলাদেশ পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় ইন্টারপোলের কাছে রেড অ্যালার্ট চাওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য ১৯২৮ সাল থেকে এবং বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সম্মানিত সদস্য। রেড অ্যালার্ট জারি হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হয়, যার অংশ হিসেবে টিউলিপকে দেশে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে যুক্তরাজ্য।

প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ হাসিনা ও আরও ৫১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

এদিকে, সোমবার বিবিসি‘র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। তারা বরং মিডিয়ার মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা তাদের চিঠি পাঠালেও কোনো জবাব মেলেনি।”

টিউলিপ আরও বলেন, “এই অপপ্রচারে আমি কোনো গুরুত্ব দিতে চাই না। এটি একেবারে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আমাকে হয়রানি করার প্রয়াস। আমার বিরুদ্ধে ভুল করার কোনো প্রমাণ নেই।”

তার আইনজীবী স্টিফেনসন হারউড অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন এবং জানিয়েছেন, তারা লিখিতভাবে বিষয়গুলো মোকাবিলা করছেন।

তবে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বিবিসিকে জানান, তদন্তে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে নিশানা করা হয়নি এবং অভিযোগগুলো দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশের আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখা উচিত নয়। আমি তাকে দেশে এসে আইনি সহায়তা নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের আহ্বান জানাই।”