Your Ads Here 100x100 |
---|
সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার সীমান্তে বিএসএফের গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত যুবক হাসিবুল আলম (২৪), হাতিবান্ধার মাধ্য সিংগীমারী সীমান্তের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলামের পুত্র। এনিয়ে সন্ধ্যায় হাতীবান্ধার সচেতন মহল শহর জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সীমান্ত সংঘটিত এ ঘটনায় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ইতিমধ্যে বিএসএফের কাছে মৃতদেহ ফেরতের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে। ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সিংগীমারী ক্যাম্পের কমান্ডার নূর ইসলাম গতরাতেই হাসিবুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে বলেন, “ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে দেহ ফেরত নেওয়ার জন্য বিএসএফকে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে হাতিবান্ধার মধ্য সিংগীমারী সীমান্তের মেইন পিলার ৮৯৪-এর সাব-পিলার ৬-এস সংলগ্ন নো-ম্যান’স ল্যান্ডে হাসিবুল ও কয়েক যুবক গবাদিপশুর জন্য ঘাস কাটছিলেন। এসময় নাগর সিংগীমারী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা নির্বিচারে গুলি চালালে হাসিবুল গুরুতর আহত হন। গুলির শব্দ শুনে অন্য যুবকরা পালিয়ে গেলেও হাসিবুলকে বিএসএফ সদস্যরা টেনে ভারতীয় এলাকায় নিয়ে যায়। পরে তাকে কোচবিহারের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কৃষক নওশের আলী জানান, “আমি সীমান্তের ধানক্ষেতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে তাকাতেই দেখি হাসিবুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন। বিএসএফ জওয়ানরা তাকে জোর করে নিয়ে যায়। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে রাগ ও আতঙ্ক রয়েছে।”
হাতিবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন-নবী বলেন, “ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পাঠানো একটি ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করে হাসিবুলের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। দেহ ফেরতের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা বিষয়টির তদন্তে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ রেখেছি।”
সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গবাদিপশুর খাদ্য সংগ্রহ বা ফসলের জমিতে কাজ করতে গিয়েও প্রায়ই বিএসএফের হয়রানির শিকার হন তারা। হাসিবুলের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অনেকেই বিএসএফের এই “অমানবিক কার্যক্রম” বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিএসএফ-এর কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া বা বিবৃতি পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জোরদার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত দেহ ফেরত ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।