Your Ads Here 100x100 |
---|
কৌশিক চৌধুরী, হিলি, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দেশের বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে শুল্ক মুক্তভাবে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয় বাংলাদেশ সরকার। সেই মোতাবেক হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়। এমনকি গত ১৪ এপ্রিল সোমবার পহেলা বৈশাখের দিনেও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। পরেরদিন (১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার) থেকে ভারত থেকে চাল আমদানির শেষ দিন এমন খবরে হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা।
এদিকে চালের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা। তাদের দাবী, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কয়েকদিনে রেকর্ড পরিমান চাল আমদানি হয়েছে তারপরও দাম বৃদ্ধি। অপর দিকে আমদানিকারকরা বলছেন, চাল আমদানি বন্ধ হওয়ায় দামটা একটু বেড়ে গেছে ,তবে যদি আর কয়েকদিন আমদানির সময় সরকার বাড়িয়ে দেয় তাহলে দামটা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো।
ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সেই সঙ্গে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় চালের আমদানি শুল্ক। এরপর গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে চাল আমদানি, তবে দেশের হাওর অঞ্চলে নতুন ধান উঠতে শুরু করায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) থেকে ভারত থেকে চাল আমদানির দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ফলে গত ১৬ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ যায়। তবে যদি কেউ চাল আমদানি করতে চায় তাহলে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করতে পারবেন। এ কারণেই শেষ দিকে আমদানি বেড়েছে। গত কয়েকদিন থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন চাল আমদানি হয়েছে গড়ে ১০০- ১৫০ ভারতীয় ট্রাক। তারপরও কমেনি চালের দাম,বরং বেড়েই চলেছে। আমদানি বন্ধের অজুহাতে হিলি স্থলবন্দরে বেড়েছে পাইকারিতে চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা।
হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমান কাটারি চাল বিক্রি হয়েছে ৬৮ থেকে ৬৯ টাকা কেজি দরে, আর সর্ণা বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে। গত কয়েকদিন আগেও কাটারি চাল বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকা কেজি দরে। তবে দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পাইকাররা।

বন্দরে চাল কিনতে আসা শাহিনুর ইসলাম সহ কয়েকজন পাইকার জানান, ১৫ এপ্রিলের আগে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ব্যপক হারে চাল আমদানি হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক করে চাল আমদানি হয়েছে। এমনকি পহেলা বৈশাখের দিনও চাল আমদানি হয়েছে ২০১ ট্রাকে ৮ হাজার ৪শ ৮১ মেট্রিকটন। তারপরও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বন্দর থেকে চাল বিক্রি না করে গুদামজাত করেছেন এবং দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের দাবী, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি বাজার মনিটরিং করা যেত তাহলে দামটা নিয়ন্ত্রনে থাকতো।
এদিকে আমদানিকারক এস এম রেজা বিপুল ও নুর ইসলাম বলেন, গত ১৫ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ হবে তাই ভারত থেকে এক সঙ্গে আমদানি করতে গাড়ি ভাড়া বেশি পড়ে গেছে, তাছাড়া চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামটা একটু বেড়ে গেছে। আমাদের উত্তরবঙ্গে ধান কাটতে এখনো ১ মাস সময় লাগবে তাই আর কয়েকদিন আমদানির অনুমতি দিলে দেশের বাজারে দামটা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি রফতানি কারক গ্রুপের সভাপতি মোঃ সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানির সময় বৃদ্ধির জন্য বন্দরের আমদানিকারকরা আবেদন করেছে। কিন্তু সরকার সময় বৃদ্ধি না গত ১৫ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ করেছে। ভারত থেকে ৬২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা সম্ভব হবে না। আর মাত্র ১৫ দিন চাল আমদানির সময় বৃদ্ধি করলে বাজারে ও চালের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়তো না বলে মনে করছি।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি স্বাভাবিক ছিলো। আমদানিকারকরা যাতে দ্রুত বাজারজাত করতে পারেন সেই লক্ষে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত ছাড়করণ করা হয়েছে। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত চাল আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫শ ৩৮ ভারতীয় ট্রাকে ১ লাখ ৮ হাজার ২শ ৭২ মেট্রিকটন।