31 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ঝালকাঠিতে কেন্দ্র সচিবসহ ৯ শিক্ষককে অব্যাহতি, ১২ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
মোঃ মাহিন খান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

ঝালকাঠির নলছিটিতে চলমান দাখিল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া তাদের সহযোগিতা করার দায়ে কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারসহ ৯ জন শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের হদুয়া বৈশাখিয়া কামিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৮ শিক্ষার্থীকে বাকি পরীক্ষাগুলো থেকে বহিষ্কার করা হয়। একইসাথে নকল কাজে সহায়তা করায় ৭ জন পরিদর্শক এবং দায়িত্বে গাফিলতির জন্য কেন্দ্র সচিব আব্দুর রব ও হল সুপারকে দায়িত্বচ্যুত করেন, নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নজরুল ইসলাম।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন—শ্রাবণী আক্তার, হাফিজুল ইসলাম, তাওহীদুল ইসলাম, মোস্থাফিজুর রহমান, রবিউল খান, রাইয়ান, আব্দুল্লাহ এবং মো. সায়েম। সকলেই হদুয়া বৈশাখিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষকরা হলেন—চরআমতলী ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট ও কেন্দ্র সচিব মো. আব্দুর রব এবং হল সুপার মো. হোসাইন। এছাড়া অব্যাহতি পাওয়া অন্য শিক্ষকরা হলেন—ছৈলাবুনিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, তালতলা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাহামুদুল হাসান, পাইলট দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক এমদাদুল হক, ডেবরা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক রেজাউল করিম, ভেরনবাড়িয়া মাদ্রাসার শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, চরআমতলী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক নিবারণ জোমাদ্দার এবং তালতলা মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা শহর থেকে দূরে হওয়ায় কেন্দ্রটিতে নজরদারি ছিল কিছুটা শিথিল। পরীক্ষার প্রথম দিনেই এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বিষয়টি ইউএনও নজরে আসতেই তিনি তৎক্ষণাৎ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। নিজেই কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দায়িত্বে গাফিলতির প্রমাণ পেয়ে ৯ শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। কেন্দ্রের ভেতর বই, নকলের কাগজ এবং খাতা দেখে দেখে লেখার প্রমাণ পান তিনি।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৭৬০ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। এ পর্যন্ত ১৫ জন শিক্ষার্থী বহিষ্কার এবং ১৮ জন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “বই, কাগজ ও দেখাদেখি করে লেখার কারণে ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করায় ৭ জন শিক্ষক এবং দায়িত্বে গাফিলতির জন্য কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় শুরু থেকেই আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। যেকোনো কেন্দ্রে অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র থেকে মিম আক্তার ও মাফিয়া আক্তার, গালুয়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মোঃ মুইন হোসাইন এবং কানুদাসকাঠি ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে সিমা নামের এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার নিয়ম ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজ এবং কানুদাসকাঠি ইসলামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে নিয়মিত নকলের মাধ্যমে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এমনকি কানুদাসকাঠি ইসলামিয়া মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব মো. আঃ রাজ্জাক এবং মাদ্রাসার সুপার আবুল কালামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নকল কাজে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। তবে তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, “আমাদের কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।” এক শিক্ষার্থী বহিষ্কারের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা বলেন, “শিক্ষার্থী অনেক, সবাইকে চেক করা সবসময় সম্ভব হয় না।”

ইউএনও রাহুল চন্দ বলেন, “পরীক্ষায় কোনো ধরনের অসদুপায় বরদাশত করা হবে না। সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি।” তিনি আরও বলেন, “অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ, শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ জাগ্রত করুন। কোনো শিক্ষক যেন প্রতিযোগিতার লোভে অনৈতিক পথে না হাঁটেন।”

উপজেলায় নকল রোধে প্রশাসনের এমন কঠোর ভূমিকাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন অভিভাবক ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

আ. লীগের মিছিল বন্ধ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা— স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পুলিশের...