Your Ads Here 100x100 |
---|
নিউজ ডেস্ক
ঢাকা বোট ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোরপূর্বক ক্লাবটির নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন বর্তমান ক্লাব সভাপতি নাসির মাহমুদ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্লাবের রিভারভিউ লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
নাসির মাহমুদ বলেন, বেনজীর আহমেদ পদে আসীন হওয়ার পর থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই তিনি বহু ব্যক্তিকে সদস্যপদ প্রদান করেন। এমনকি ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনকেও তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে পদে নিয়োগ দেন।
এই আর্থিক অনিয়মের তথ্য ক্লাবের বর্তমান কমিটির নিয়োগকৃত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান তদন্ত করে উদঘাটন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেনজীর আহমেদ এবং তাহসিন আমিনকে ক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
নাসির মাহমুদ বলেন, “বেনজীর আহমেদ বিনা ভোটে বোট ক্লাবের সভাপতি হন এবং সামাজিক সম্মান অর্জনের চেষ্টা করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছিলেন, যেটি পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাতিল করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “৩২ কোটি টাকার হিসাব যাচাইয়ের জন্য স্বনামধন্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম হুদাবাসিকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হয়তো কিছুটা হেরফের হতে পারে, তবে বড় কোনো পরিবর্তন হবে না।”
অভিযোগ করে তিনি বলেন, “বেনজীর আহমেদ আমাকে তিন বছর ক্লাবে প্রবেশ করতে দেননি। আমি এলেই গুম কিংবা অন্যভাবে হয়রানির আশঙ্কা ছিল। আমি কেবল একজন সাধারণ ব্যবসায়ী, তার সঙ্গে লড়াই করার মতো অবস্থান তখন আমার ছিল না। তবুও আমি আইনগত লড়াই চালিয়ে গেছি।”
পরীমনি-কাণ্ডের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পরীমনি এই ক্লাবের সদস্য নন। তিনি অন্য একজনের অতিথি হিসেবে ক্লাবে এসেছিলেন। কোনো অনুমতি না থাকায় আমি প্রতিবাদ করেছিলাম, যার পরিণতিতে আমার ওপর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
তিনি আরও জানান, নানা চাপের মুখে পড়ে তারা একসময় বেনজীর আহমেদকে সভাপতি পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি নিয়ম-কানুন মানেননি, বরং সময়ক্ষেপণ করেছেন। ক্লাবটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় প্রতি বছর কিছু নথি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিলের প্রয়োজন হয়, যা তিনি কখনো করেননি। এতে ক্লাবের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
তবে পরবর্তীতে নির্বাচন আয়োজন করতে বাধ্য হন বেনজীর। নাসির মাহমুদ জানান, ২৪ জুন তাকে নোটিশ দিয়ে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। চরম ক্ষমতার মধ্যেও তিনি নির্বাচন আয়োজন করতে বাধ্য হন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নকিব সরকার অপু, মো. জেসমুল হুদা মেহেদী অপু, আসমা আজিজ, এ কে এম আইয়াজ আলী (খোকন), আলীম আল কাজী (তুহিন), খালেদা আক্তার জাহান, মির্জা অনিক ইসলাম, আজাদ এম এ রহমান, মো. জাকির হোসাইন এবং খন্দকার হাসান কবিরসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।