27 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫

পোপ ফ্রান্সিস আর নেই

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। ইতালির রোমে একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

ভ্যাটিকান নিউজ সার্ভিস জানিয়েছে, ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তা বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে বিবিসিও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পোপ ফ্রান্সিস হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় একাধিকবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। কিছুদিন আগে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন।

ভ্যাটিকানের মুখপাত্র কার্ডিনাল ফারেল এক বিবৃতিতে বলেন, “তাঁর জীবন ছিল সম্পূর্ণভাবে প্রভু ও গির্জার সেবায় নিবেদিত।” মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেও তিনি সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে উপস্থিত হয়ে হাজারো উপাসকের উদ্দেশে “শুভ ইস্টার” বার্তা প্রদান করেন।

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্বজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বিশ্ব নেতাদের মধ্যে অন্যতম ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ পোপকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “তিনি ছিলেন বিনয়ের প্রতীক; সবসময় দুর্বল ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।”

ভ্যাটিকানের দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ‘দি হোলি সি’র তথ্যমতে, পোপ ফ্রান্সিসের আগের নাম ছিল জর্জ মারিও বারগোগ্লিও। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর, আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে। তাঁর বাবা মারিও ছিলেন ইতালীয় অভিবাসী এবং পেশায় রেলওয়ের হিসাবরক্ষক; মা রেগিনা সিভোরি।

কেমিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন জর্জ মারিও। পরবর্তীতে তিনি দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৬৯ সালে ধর্মযাজক হিসেবে দীক্ষিত হন। ১৯৯৮ সালে আর্জেন্টিনার আর্চবিশপ নিযুক্ত হন তিনি।

তৎকালীন পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট ২০১৩ সালে বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে পদত্যাগ করলে জর্জ মারিও নির্বাচিত হন নতুন পোপ হিসেবে। তিনি ‘ফ্রান্সিস’ নাম গ্রহণ করেন, যা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ হিসেবেও ইতিহাস সৃষ্টি করে।

রোমান ক্যাথলিক চার্চের নেতা হিসেবে ১২ বছর দায়িত্ব পালনকালে পোপ ফ্রান্সিস একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হন। জানা যায়, মাত্র ২১ বছর বয়সে তাঁর একটি ফুসফুসের অংশ কেটে ফেলতে হয়েছিল।

পোপ ফ্রান্সিস ক্যাথলিক গির্জায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এনেছেন, যা তাঁকে স্মরণীয় করে রাখবে। তিনি ক্যাথলিক, নন–ক্যাথলিক ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন।

ধর্মযাজকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকারদের এবং কানাডার আদিবাসীদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দেন। এছাড়া সমলিঙ্গের যুগলদের আশীর্বাদ দিতে রোমান ক্যাথলিক যাজকদের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

পোপ ফ্রান্সিস স্পষ্ট করে বলেন, ক্যাথলিক গির্জার দরজা সবার জন্য খোলা। এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্যরাও গির্জায় এসে প্রার্থনা করতে পারেন, তবে গির্জার নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।

এ বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ Hope, যা প্রকাশ করেছে পেঙ্গুইন র‍্যান্ডম হাউস।

২০১৭ সালের নভেম্বরে পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশ সফর করেন। সেবার তিনি ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করে তাঁদের প্রতি সহানুভূতি জানান এবং সবার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শেখ হাসিনা ফিরে এলে জনগনই ব্যবস্থা নিবে- বিএনপি মহাসচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিয়ে শেখ হাসিনা আবারো ফিরে...