31 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই পৃথিবী গঠনের আহ্বান ড. ইউনূসের

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
নিউজ ডেস্ক

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই ও সহনশীল পৃথিবী গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনে’ বক্তৃতাকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

ড. ইউনূস বলেন, “পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ, স্থিতিশীল ও টেকসই বিশ্ব গড়ে তোলা সময়ের দাবি। এই ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে জ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে।”

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি প্রণয়নের অনুকূল অবস্থানে রয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনগণের—বিশেষত তরুণ সমাজের—অধিকার, মর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশকে “আশার বাতিঘর” হিসেবে গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস বলেন, “সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও মাইক্রোফাইন্যান্সের গুরুত্ব নতুন করে মূল্যায়নের প্রয়োজন রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমেই প্রান্তিক জনগণের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব।”

তিনি বলেন, “একটি টেকসই, সহনশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে হলে এখনই সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। এর জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নকে মৌলিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।”

বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের গতি, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মানবিক সংকট এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার দুর্বলতা—এসব মিলিয়ে আজ বিশ্ব এক অনিশ্চিত সময় অতিক্রম করছে। পাশাপাশি, প্রযুক্তি, নীতিমালা ও শাসন কাঠামোর দ্রুত পরিবর্তনের ফলে অনেক পুরোনো ধারণা অচল হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা আরও জোরদার করা জরুরি।”

এক মানবিক ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন এমন একটি পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র থাকবে না যে স্বপ্ন দেখতে পারবে না, এবং কোনো স্বপ্ন এত বড় হবে না যে তা বাস্তবায়ন করা যাবে না। ভবিষ্যৎ এমন কিছু নয় যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাই, এটি আমরা গড়ে তুলি—এবং এ গঠনে আমাদের প্রত্যেকেরই ভূমিকা রয়েছে।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, “যেসব বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে রয়েছে, সেগুলো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এসব মোকাবিলায় আমাদের হাতেই রয়েছে উদ্ভাবন, সহমর্মিতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার শক্তি।”

সম্মেলনের বক্তব্যে তিনি বলেন, “এই আয়োজনের মাধ্যমে কাতার প্রমাণ করেছে—জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য ও কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎকে উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়।”

বক্তৃতার এক পর্যায়ে সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও মাইক্রোফাইন্যান্সের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এসব উপায়েই প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি সম্ভব।”

এ সময় তিনি সম্মেলনের সফল আয়োজনের জন্য কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান কাতারের মন্ত্রী ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

হাইকোর্টে জামিন পেলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস

নিউজ ডেস্ক জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ...