Your Ads Here 100x100 |
---|
নিউজ ডেস্ক
শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, মূলধারার শিক্ষায় কারিগরি শিক্ষা সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তিনি জানান, “কারিগরি শিক্ষাকে অবমূল্যায়ন করা হয় এবং এটিকে মিস্ত্রি তৈরির কারখানা হিসেবে দেখা হয়, যা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার।”
তিনি আরো বলেন, “কারিগরি শিক্ষা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এবং এখন এটি কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ট্রেডভিত্তিক শিক্ষকের সংকট রয়েছে এবং দক্ষতার অভাব রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কারিগরি শিক্ষাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে।”
সোমবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে ‘কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “কারিগরি শিক্ষার্থীরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কলকারখানা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে তারা তাদের দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে সাহায্য করবে।”
তিনি আরও বলেন, “যতই ম্যানেজমেন্ট শিখি, সেগুলোও প্রয়োজনীয়, তবে যদি আমরা সঠিকভাবে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্ত করতে পারি, তাহলে জাতীয় উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।”
এছাড়া, কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার আলোচনা স্মরণ করে বলেন, “তিনি আমাকে বলেছেন, ‘এটি তোমার জন্য একটি বড় দায়িত্ব।’ আমি সেই দায়িত্ব পালন করতে সচেষ্ট রয়েছি।”
শিক্ষা উপদেষ্টা আরো মন্তব্য করেন, “কারিগরি শিক্ষায় যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বাস্তব জীবনের চাহিদার সঙ্গে সংযুক্ত থাকত এবং তারা দক্ষ কর্মী তৈরি করতে সহায়তা করত, তবে দেশের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলো এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বমানের দক্ষতা তৈরি করতে সক্ষম হতো।”
অধ্যাপক সি আর আবরার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিক থেকে কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হয়নি। জাতীয় পার্লামেন্টে এমন কোনো গঠনমূলক আলোচনা হয়নি।”
এছাড়া, তিনি বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি আমরা কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি করি, তাহলে দেশের উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত হবে।”
তিনি গত ৪০ বছর ধরে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, “দলীয় রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা ব্যক্তি যারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ নষ্ট করেছেন, তাদের জন্য আমি দুঃখিত।”
সি আর আবরার আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের আচরণে যেহেতু ট্রমা থেকে এসেছে, তাদের বুঝিয়ে, ধৈর্য সহকারে পাঠদান করা উচিত। আমাদের সবাইকে ধৈর্য রাখতে হবে এবং সহমর্মিতার সঙ্গে দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে হবে।”
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব খ ম কবিরুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমদ খান উপস্থিত ছিলেন।