Your Ads Here 100x100 |
---|
নিউজ ডেস্ক
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে টানা চার রাত ধরে দুই দেশের সীমান্তে নিয়মিত গুলিবিনিময় চলছে।
এমন উত্তেজনাকর পরিবেশে ভারত তার নৌবাহিনীকে আধুনিকীকরণের উদ্দেশ্যে ফ্রান্সের সাথে একটি বিশাল চুক্তি করেছে। ৬৩ হাজার কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা) ব্যয়ে ভারতের নৌবাহিনী ২৬টি রাফায়েল-এম যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে, যা সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি প্রকাশ করেছে।
চুক্তির আওতায় ভারত ২২টি একক আসনের এবং ৪টি দুই আসনের প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান কিনবে। এই যুদ্ধবিমানগুলো ২০৩১ সালের মধ্যে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে এসে পৌঁছাবে। চুক্তি অনুযায়ী, এই যুদ্ধবিমানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, লজিস্টিক সহায়তা এবং কর্মী প্রশিক্ষণও নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া, ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কিছু যন্ত্রাংশ দেশেই উৎপাদিত হবে। ফ্রান্সের নৌবাহিনী ছাড়া বর্তমানে বিশ্বের অন্য কোনো দেশ এই রাফায়েল-এম যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে না।
রাফায়েল-এম বিমানগুলোতে রয়েছে শক্তিশালী ল্যান্ডিং গিয়ার, ভাঁজ করা ডানা এবং বিশেষভাবে বিমানবাহী রণতরীতে নামার জন্য উন্নত ব্যবস্থা। ভারতের বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত এবং আইএনএস বিক্রমাদিত্যতে এসব যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হবে, যা ভারতের নৌ-যুদ্ধ সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করবে এবং পুরোনো মিগ-২৯কে বিমানগুলোকে পর্যায়ক্রমে প্রতিস্থাপন করা হবে।
ভারতের নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, ভারত এমন কৌশলগত প্রস্তুতি নিচ্ছে যাতে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব হয় এবং প্রতিবেশী হুমকির মোকাবিলা করতে দেশ প্রস্তুত থাকে।
বর্তমানে ভারতের বিমানবাহিনীর কাছে ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান রয়েছে, যা মূলত দুটি উত্তরাঞ্চলীয় ঘাঁটি থেকে পরিচালিত হয়। নৌবাহিনীর জন্য রাফায়েল-এম সংগ্রহের ফলে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা আরও বাড়বে, বিশেষ করে ‘বাডি-বাডি’ রিফুয়েলিং পদ্ধতির মাধ্যমে বিমানের মিশনকাল দীর্ঘায়িত হবে।
ভারতীয় নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় দেশীয়ভাবে তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান যুক্ত করার উদ্যোগও রয়েছে। এগুলো হবে বিমানবাহিনীর জন্য তৈরি অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এএমসিএ) এর নৌ সংস্করণ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের এই সামরিক বিনিয়োগ কেবল শক্তি বৃদ্ধির জন্য নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।