Your Ads Here 100x100 |
---|
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর দেওয়ার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা মনে করছে, এই পদক্ষেপ দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা অনুচিত।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ে গণসংযোগকালে বলেন, “মানবিক করিডোরের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।” তিনি আরও বলেন, “মানবিকতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাংলাদেশ যেন আরেকটি যুদ্ধের অংশ হয়ে না পড়ে বা অভ্যন্তরীণ অস্থিরতায় না জড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “রাখাইনের মানবিক করিডোর ইস্যুটি জাতির কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা প্রয়োজন। এর সঙ্গে নিরাপত্তাজনিত বিভিন্ন বিষয় জড়িত থাকতে পারে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, “পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আকাঙ্ক্ষাই গণঅভ্যুত্থানের একটি মূল আদর্শ। এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও জনমতের প্রতিফলন ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা। গত মাসে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং মানবিক সহায়তার জন্য রাখাইনে করিডোর তৈরির আহ্বান জানান।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান জানান, রাখাইনে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবিক করিডোর গঠনের প্রস্তাব গত ৮ এপ্রিল সরকারকে জানানো হয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সরকার শর্তসাপেক্ষে করিডোর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জামায়াতের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি চীন সফরে আসা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের রোহিঙ্গা সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা নিয়ে পৃথক রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দেন বলে জানা যায়। তবে পরদিন তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, “মূলত আমরা রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি, স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের নয়।”