Your Ads Here 100x100 |
---|
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনের আমির আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে শনিবার (৩ মে) অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শেখ হাসিনার মতো ভুল করবেন না। ৯০ শতাংশ মুসলমানের এই দেশে কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো নীতি বাস্তবায়ন করার সাহস করবেন না।
সমাবেশে বক্তারা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে কুরআন-সুন্নাহবিরোধী উল্লেখ করে অবিলম্বে প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিলের দাবি জানান। তারা বলেন, “যদি এই প্রতিবেদন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে জীবন দিয়ে তা প্রতিরোধ করা হবে। প্রয়োজনে হেফাজতে ইসলাম ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”
হেফাজতের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনাকে তারা ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে, এবং তা তদন্তে কমিশন গঠনের আহ্বান জানায়। বক্তারা বলেন, আপনারা পিলখানা হত্যাকাণ্ড, জুলাই আন্দোলনের ঘটনার বিচার কমিশনের মাধ্যমে করেছেন; তাহলে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে সংঘটিত ‘গণহত্যার’ তদন্ত কেন হয়নি?
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘রাজনৈতিক মামলা’ সরকার প্রত্যাহার করলেও, হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আগের সরকারের আমলে দায়ের করা মামলা এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি। তারা এসব মামলার অবিলম্বে প্রত্যাহার দাবি করেন।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তোলে হেফাজতের নেতারা। তারা বলেন, এই কমিশনের সদস্যরা নারী না পুরুষ—তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা ইসলামের মৌলনীতি পরিপন্থী। তারা দাবি করেন, এই প্রতিবেদন ‘১৮ কোটি মুসলমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’ হিসেবে কাজ করছে।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেন, “আমরা নির্যাতিত হলাম, জেল খাটলাম, অথচ আমাদের মামলাগুলো এখনো বাতিল হয়নি। এই প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।”
মহাসমাবেশ থেকে বক্তারা আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও অবস্থান তুলে ধরেন। ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিমদের ওপর ‘গণহত্যা ও নিপীড়ন’ বন্ধে সরকারের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তারা। তবে পুরো সমাবেশজুড়ে অধিকাংশ বক্তার বক্তব্যে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তার প্রতিবেদন বিরোধিতায় স্পষ্ট মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে।