26 C
Dhaka
রবিবার, মে ৪, ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্থনি অ্যালবানিজের ঐতিহাসিক পুনর্নির্বাচন: ট্রাম্প-প্রভাবের ছায়ায় কনজারভেটিভদের পরাজয়

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অ্যান্থনি অ্যালবানিজ শনিবার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছেন। এক সময় ঘুরে দাঁড়ানো কনজারভেটিভদের বিপক্ষে এই নাটকীয় প্রত্যাবর্তনের পেছনে মূল চালিকা শক্তি ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাব নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ।

কনজারভেটিভ লিবারেল পার্টির নেতা পিটার ডাটন পরাজয় মেনে নিয়েছেন এবং নিজ আসনটিও হারিয়েছেন—যা সম্প্রতি কানাডার কনজারভেটিভ নেতার ভাগ্যের সঙ্গে মিল খুঁজে পায়। কানাডার ক্ষেত্রেও ট্রাম্প-প্রভাবকেই পরাজয়ের কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সিডনিতে লেবার পার্টির নির্বাচনী পার্টিতে সমর্থকরা উল্লাসে মেতে ওঠেন, পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন এবং অ্যালবানিজের জয় ঘোষণাকে স্বাগত জানান।

“এটি যুগান্তকারী এক বিজয়,” বলেন লেবার ট্রেজারার জিম চালমার্স, অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে (ABC) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেন, অ্যালবানিজ “ফেডারেশন পরবর্তী অন্যতম বড় রাজনৈতিক জয় ছিনিয়ে এনেছেন।”

৫৪ বছর বয়সী লেবার সমর্থক মেলিন্ডা অ্যাডারলি বলেন, “ফলাফলগুলো একেবারেই অবিশ্বাস্য,”—এই কথাগুলো বলেন তিনি কান্নাভেজা চোখে।

দুই দশকের মধ্যে এই প্রথম কোনো অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী টানা দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পেলেন।

অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টোরাল কমিশনের প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, দুই-দলীয় পছন্দের ভিত্তিতে লেবার পার্টি ৫৫.৯৪% ভোট পেয়ে লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের ৪৪%–এর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

ডাটন জানান, তিনি অ্যালবানিজকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
“এই প্রচারণায় আমরা যথেষ্ট ভালো করতে পারিনি, সেটি আজ স্পষ্ট। এর পূর্ণ দায়ভার আমি নিচ্ছি,”—বলেন ডাটন তাঁর টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে।

তিনি আরও জানান, ডিকসন আসনে লেবার প্রার্থীকেও তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন, যেটি তিনি দুই দশক ধরে ধরে রেখেছিলেন।

“এই নির্বাচনে প্রতিপক্ষের বর্ণনায় আমরা যে পরিচয়ে পরিণত হয়েছি, সেটিই আমাদের প্রকৃত পরিচয় নয়,” বলেন ডাটন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, কনজারভেটিভ পার্টি আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

ট্রাম্প তুলনা

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতিগত অস্থিরতা ভোটারদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছিল বলে জনমত জরিপে উঠে এসেছে।

উত্তর টেরিটরির লিবারেল সিনেটর জাসিনতা প্রাইস বলেন, “যদি যথেষ্ট কাদা ছোড়া হয়, কিছু না কিছু লেগেই যায়।” তাঁর ‘Make Australia Great Again’ মন্তব্য ট্রাম্পের বিখ্যাত স্লোগানের সঙ্গে তুলনা টেনেছিল।

তিনি বলেন, “আপনারা পুরো বিষয়টাকে ট্রাম্প-কেন্দ্রিক বানিয়ে ফেলেছেন।”

ডাটন ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি প্রাইসকে সরকারি দক্ষতা সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেবেন—ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতির সঙ্গে এই বিষয়টিও তুলনীয় হয়ে ওঠে।

প্রাইস বলেন, “পিটার ডাটনের পরাজয় একটি বড় ক্ষতি।”

অন্যদিকে, লিবারেল পার্টির মুখপাত্র সিনেটর জেমস প্যাটারসন বলেন, কনজারভেটিভ প্রচারণা ‘ট্রাম্প প্রভাব’ দ্বারা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, “কানাডায় এটি কনজারভেটিভদের জন্য ছিল ধ্বংসাত্মক…আমার মনে হয় এখানেও এর প্রভাব পড়েছে—কতটা প্রভাব ফেলেছে, সেটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বোঝা যাবে।”

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেও জনমত জরিপে লিবারেলরা এগিয়ে ছিল, কারণ জনগণ সরকারকে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং বাড়িভাড়া বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছিল।

ভোট গণনার সময়, লেবার ট্রেজারার চালমার্স বলেন, ২০২৪ সালের শেষ দিকে সরকার চাপে থাকলেও অ্যালবানিজের শক্তিশালী প্রচারণা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় মোকাবিলায় কার্যকর নীতিমালার কারণে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে।

“অর্থনীতি নেতিবাচক থেকে ইতিবাচকে পরিণত হয়েছে—সুদহার কমানো ছিল এর একটি বড় অংশ,” বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের ঠিক আগে ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়েছে, যা আগের ১৩ বার বৃদ্ধির ধারা পাল্টে দিয়েছিল এবং গৃহঋণের উপর চাপ কিছুটা কমায়।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

সংস্কৃতির মঞ্চে রাজনীতির ঝড় : এবার কড়া প্রতিবাদ জানালেন হানিয়া আমির

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যখনই রাজনৈতিক উত্তেজনার ছায়া ঘনিয়ে আসে, তার কাঁপুনি প্রথমেই লাগে সংস্কৃতির মঞ্চে। ২০১৬ সালে কাশ্মীরের উরিতে ভয়াবহ...