বিএনপির সমর্থনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস টিকে আছেন: শামসুজ্জামান দুদু

নিউজ ডেস্ক :

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মন্তব্য করেছেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার অবস্থান ধরে রাখতে পারছেন বিএনপির সমর্থনের কারণে।

শনিবার (০৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সাবেক মন্ত্রী সুনীল গুপ্তর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণসভাটি আয়োজন করে সুনীল গুপ্ত স্মৃতি সংসদ।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “আমরা গত ১৫-১৬ বছর ধরে সংগ্রাম করছি এবং সংগ্রাম এখনও চলমান। এই সংগ্রাম শেষ হবে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে। যতদিন পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হবে, আমাদের সংগ্রাম চলবে, এটা সবার মনে রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যাকে সমর্থন দিচ্ছি, তিনি হচ্ছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সমর্থনে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে, বিএনপি যদি তার সমর্থন প্রত্যাহার করে, কী হবে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না, বা তাকে বুঝতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা তাকে সমর্থন করছি যাতে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখন নির্বাচনের কথা বললেই যেন এটি একটি বড় অপরাধ হিসেবে দেখা হচ্ছে।”

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “কিছু লোক বলেন যে, কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি। তাদের বলি, যদি কোনো দল ক্ষমতায় না আসে, তাহলে কে আসবে? সামরিক শাসন? নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রের উত্তরণের আর কোনো পথ নেই, তা যদি তারা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে, তবে বুঝতে পারবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষা করতে হলে, দেশের অভ্যন্তরীণ শত্রুদের মোকাবিলা করতে হলে এবং বাংলাদেশকে বিকশিত করতে হলে, একটি রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন। সেই সরকার আসবে নির্বাচনের মাধ্যমে। আমি বলছি না বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, তবে যে দলই আসুক, তা নির্বাচনের মাধ্যমে হবে এবং তারা বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করবে।”

দুদু মন্তব্য করেন, “একদল আছে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানতে চায়নি এবং মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছে। তারা যেন এখন দেশের সবকিছু বলে মন্তব্য করেন।”

তিনি বলেন, “দেশবাসী জানে, আমরা জানি, বিএনপি ছাড়া আর কোনো দল নেই যারা ক্ষমতায় আসবে এবং দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। যারা বিএনপিকে বাদ দিতে চায়, তাদের বলব, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সুনীল গুপ্ত এদের দিকে তাকান, তাহলে বুঝবেন রাস্তা সোজা না আঁকাবাঁকা।”

সাবেক মন্ত্রী সুনীল গুপ্তর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “সুনীল গুপ্ত জাতীয়তাবাদী ও প্রগতিশীল রাজনীতির একজন অন্যতম পথপ্রদর্শক। তাকে স্মরণ করা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। মাওলানা ভাসানী, সুনীল গুপ্ত, মশিউর রহমান যাদু মিয়া—তাদের রাজনৈতিক জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। এই বিষয়গুলো এড়ানো কিংবা আড়াল করলে, বাংলাদেশ ততটাই দুর্বল হবে।”

স্মরণসভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, বিজন কান্তি সরকার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।