Your Ads Here 100x100 |
---|
নিউজ ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের পিএইচডি ডিগ্রি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস (ইউএনএসডব্লিউ)। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিনি সেখানে ডক্টরেট সম্পন্ন করেননি।
রবিবার (৪ মে) একটি বাড়ি সংক্রান্ত মামলার আপিল শুনানিতে বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হায়দার।
এর আগে, গত ১৩ মার্চ আপিল বিভাগের শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক আদালতকে জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর থাকা অবস্থায় তুরিন আফরোজ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন এবং এক মুহূর্তে তার মাকে নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেন। তিনি আদালতের কাছে উত্তরার ওই বাড়িতে তুরিন আফরোজের মায়ের বসবাস নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রার্থনা করেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি হয় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রাজধানীর উত্তরার একটি পাঁচতলা বাড়ি নিয়ে জারি করা স্থিতাবস্থার আদেশ বাতিল করে দেয়। আদালতের রায়ে বলা হয়, ওই বাড়িতে শামসুন্নাহার বেগম (তুরিন আফরোজের মা) ও তার ছেলে শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ আহমেদের বসবাসে আর কোনো আইনগত বাধা নেই।
বিচারপতি মো. সেলিমের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল যথাযথ ঘোষণা করে এই রায় দেন।
আদালতে শামসুন্নাহার বেগম ও শাহনেওয়াজের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বিএম ইলিয়াস কচি, ব্যারিস্টার মনজুর রাব্বী ও ব্যারিস্টার আতিকুল হক। অন্যদিকে তুরিন আফরোজের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাইফুল করিম।
ব্যারিস্টার আতিকুল হক জানান, রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সড়কের ১৫ নম্বর প্লটের পাঁচতলা বাড়িটিতে ২০০২ সাল থেকে শামসুন্নাহার বেগম ও শিশির আহমেদ শাহনেওয়াজ বসবাস করে আসছিলেন। তবে ২০১৭ সালে তুরিন আফরোজ তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং নিজে দখল নেন। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ ভোগদখল ও মালিকানা দাবি করে দুইটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ভোগদখলের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্যায়ে মামলাটি জেলা জজ আদালত ও হাইকোর্টে গড়ায়। সর্বশেষ, ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চ উত্তরার ওই বাড়ি নিয়ে স্থিতাবস্থা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পরে মামলাটি বিচারপতি মো. সেলিমের বেঞ্চে স্থানান্তরিত হলে ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রুল যথাযথ ঘোষণা করে স্থিতাবস্থা বাতিল করেন।
এতে বলা হয়, এখন থেকে ওই বাড়িতে শামসুন্নাহার বেগম ও শাহনেওয়াজ আইনগতভাবে বসবাস করতে পারবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো বাধা নেই।
আইনজীবী আতিকুল হক আরও জানান, বাড়ির মালিকানা নিয়ে চলমান দুটি দেওয়ানি মামলা নিয়মিত বিচারিক আদালতে চলবে।
মামলার আরজিতে তুরিন আফরোজ দাবি করেন, তার মা ১৯৯১ সালে উত্তরার সম্পত্তি ক্রয় করেন এবং ১৯৯২ সালে তার স্বামী তসলিম উদ্দিনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে তসলিম উদ্দিন মেয়ে তুরিন আফরোজকে দানপত্রে (হেবা) ওই সম্পত্তি দেন।
তবে শামসুন্নাহার বেগম ও তার ছেলে শাহনেওয়াজ আদালতে লিখিত জবাবে জানান, তসলিম উদ্দিন কখনো তুরিন আফরোজকে সম্পত্তি দেননি। বরং ১৯৯৭ সালে শামসুন্নাহার তার ছেলে শাহনেওয়াজকে ওই সম্পত্তি দান করেন। এরপর ১৯৯৯ সালে নামজারি করে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন থেকে ঋণ নিয়ে রাজউকের অনুমোদিত নকশায় বাড়ি নির্মাণ করেন এবং ২০০২ সাল থেকে তারা সেখানে বসবাস করছেন।