Your Ads Here 100x100 |
---|
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আদীব আলীর রায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলা থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও দলটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুসহ ৭০ জন আসামি নিঃশর্ত খালাস পেয়েছেন। সোমবার (১২ মে ২০২৫) দুপুরে আদালতের এ রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির সময় লালমনিরহাট সদরের বড়বাড়ি শিমুলতলা এলাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কে খুঁটি পুঁতে, কুড়াল ও কোদাল ব্যবহার করে পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৯ জানুয়ারি লালমনিরহাট সদর থানার তৎকালীন এসআই জাফর ইকবাল ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসাদুল হাবিব দুলুসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০-৫৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) কে এম হুমায়ুন রেজা স্বপন জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলাটিকে হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে আসামিদের খালাস চাওয়া হয়। আদালত অভিযোগ গঠনের দিনে পিপির বক্তব্য এবং মামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে রায় দেন। বিচারক আদীব আলী মামলার প্রমাণাদি পর্যবেক্ষণ করে সব আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
খালাসপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “এ মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গায়েবী ছিল। ফ্যাসিবাদী সরকার গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনে মিথ্যা মামলার অপচেষ্টা করলেও জনগণের আন্দোলনের কাছে তারা পরাজিত হয়েছে।” তিনি আদালতের রায়কে “ন্যায়বিচারের জয়” হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই রায়ের মাধ্যমে ১১ বছরের দীর্ঘ মামলার ইতি টানা হলো। বিএনপি দাবি করে আসছে যে, সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হাজারো মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই খালাসকে তারা “গণতন্ত্রের বিজয়” হিসেবে প্রচার করছে।
লালমনিরহাটে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যেই এই রায় এসেছে। গত কয়েকদিন আগে জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটিতে স্বজনপ্রীতি ও পদত্যাগের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে, যা দলের মধ্যে উত্তাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে এই রায় দলটির কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
এই রায় রাজনৈতিক মামলা ও বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ককে পুনরায় সামনে এনেছে। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সকল পক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন।