28 C
Dhaka
সোমবার, মে ১৯, ২০২৫

নগর ভবনের সামনে মঙ্গলবারও বসবেন ইশরাক সমর্থকরা

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

খবরের দেশ ডেস্ক :

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে মঙ্গলবার ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তার অনুসারীরা।

সোমবার সকাল থেকে নগর ভবন ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ পালনের মধ্যে বিকালে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সাবেক সচিব মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, “আজকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলেছেন, ‘হাই কোর্টে মামলা পেন্ডিং আছে। আদালতের রায় পেন্ডিং থাকায় এটা নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না’। এটা অত্যন্ত মিথ্যা কথা। এটা জাতির সাথে প্রতারণা করা। যে চেতনা নিয়ে, আদর্শ নিয়ে জুলাই বিপ্লব ঘটেছিল, সে চেতনার সাথে এটা যায় না। এই মিথ্যে কথাটি যায় না।”

মশিউর বলেন, “ব্যাপারটি এরকম, আদালত রায় দিয়েছে ইশরাক হোসেনকে ঢাকার মেয়র হিসেবে। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান; তারাও ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট করে দিয়েছে। সরকার কোথা থেকে কোন এক পথের লোককে ধরে এনে একটি রিট করেছে।

“এই রিট মামলায় কিন্তু কোনো আদেশ হয়নি। এই রিট মামলা এখনও কোর্ট গ্রহণ করেনি। অথচ তিনি (আসিফ মাহমুদ) বলছেন এটি নিয়ে একটি রিট মামলা থাকায় এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না, করা যাচ্ছে না। আমি বলব, এই ধরনের মনমানসিকতা পরিত্যাগ করতে হবে।”

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি বয়সে নবীন। আপনার সামনে অনেকদূর যেতে হবে। এখনই যদি মানুষকে এত ধোঁকা দেওয়া শুরু করেন, মানুষকে বোকা বানানো শুরু করেন, এদেশের মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চান, তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চান, তাহলে পরে মানুষ কিন্তু আপনাকে আর বিশ্বাসও করবে না এবং আপনার নেতৃত্বও মেনে নেবে না। আপনাকে দেখলে মানুষ কিন্তু ধিক্কার জানাবে৷ আমি বলছি, এখনও সময় আছে। আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেন।”

নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী দিন (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় আমরা এখানে আসব সদলবলে। এখানে এসে নগরভবনের সামনে আমরা অবস্থান কর্মসূচি নেব এবং বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত এখানেই থাকব আজকের মত।

“যদি পরিস্থিতি বাধ্য করে, কোনো দিকে পরিস্থিতি মোড় নেয়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। আপনারা সামনে কঠিন কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত থাকবেন।”

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছেন তার সমর্থকরা। সেদিন থেকেই ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল।

ইশরাককে মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে সোমবার নগর ভবন ‘ব্লকেড’ কর্মসূচিতে নামেন তার সমর্থকরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ অবরুদ্ধ কর্মসূচি শুরু হয়।

আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ বানান। সেখানে চলে সংগীত পরিবেশন। নগর ভবন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো মাইকে চলে স্লোগান, হয়েছে ছোট-ছোট মিছিল।

বিক্ষোভকারীরা গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের সামনে এক পাশে সড়ক বন্ধ করে অবস্থান নেন। এতে দুর্ভোগে পড়েন ওই পথে চলাচলকারীরা। এ ছাড়া নগর ভবনের দুই পাশের সড়কেও তারা অবস্থান নেন। বৃষ্টির মধ্যে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যান।

জটিলতা নিরসন নাহলে শপথ সম্ভব না: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোতে বেশ কিছু ‘জটিলতা’ দেখছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আন্দোলন কর্মসূচি চলার মধ্যে সোমবার বিকালে নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে আসিফ লিখেন, “…উচ্চ আদালতে বিচারাধীন এবং উপরোল্লিখিত জটিলতা নিরসন না করা পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গাঁয়ের জোরে আদায় করার উদ্দেশ্যেই নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে। ফলে সিটি করপোরেশনের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হওয়াসহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।”

পোস্টে বেশ কিছু ‘জটিলতার কথা’ ‍তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “এসব জটিলতা নিরসন হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের শপথ দিতে কোনো সমস্যা নেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার বিরুদ্ধে ইশরাক হোসেনের এই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কার্যক্রমের কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না।

আবার কেও বলবেন না যে এটা সাধারণ জনগণ করছে, কারণ বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপের নির্দেশনা এবং গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী দলীয় নেতাকর্মীরাই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।”

আসিফ মাহমুদ যেসব জটিলতার কথা বলছেন তা হল –

>> আর্জি সংশোধন অবৈধ মর্মে হাইকোর্টের রায় ভায়োলেট করে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করেছে।

>> নির্বাচন কমিশন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করায় একপাক্ষিক রায় হয়েছে এবং পরবর্তীতে কমিশন আপিলও করেনি।

>> আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলেও, মতামত দেওয়ার আগেই এবং একইসঙ্গে দুইজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

>> উক্ত মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ পক্ষভুক্ত ছিল না এবং রায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনার উল্লেখ নেই।

>> শপথ না দেওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যা এখনও বিচারাধীন।

>> বরিশাল সিটি করপোরেশন সংক্রান্ত মামলায়, আর্জি সংশোধন সংক্রান্ত হাই কোর্টের রায়কে আমলে নিয়ে খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। ফলে ট্রাইব্যুনালের দ্বিমুখী অবস্থান বোধগম্য হচ্ছে না।

>> মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে। কতদিন মেয়র থাকবেন বা আদৌ মেয়াদ আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।

>> নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে ‘কোনো প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ’ এর কথা বলা হয়েছে। স্পষ্টতই বিতর্কিত রায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতি কোনো নির্দেশনা না থাকা, লিগ্যাল নোটিশ এবং রিট পিটিশন বিচারাধীন থাকা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা রয়েছে। এই জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।

>> আওয়ামী আমলের অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি স্বীকার করে যে আওয়ামী আমলের নির্বাচনগুলো বৈধ, তবে সরকারের জন্য এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে না।

যা বলছেন ইশরাক

আসিফের বক্তব্যের পর ফেইসবুকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, “মেয়র ফেওর কিছু না। অন্তর্বর্তী সরকারের কতিপয় ব্যক্তির অন্তরে ক্ষমতার লোভ ও এটি চিরস্থায়ী করার কুৎসিত সত্যটা বের করে আনাটাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।”

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “অনেক সমালোচনা মাথা পেতে নিয়েছি, পিতামাতা তুলে গালিগালাজও চুপ করে সহ‍্য করে গিয়েছি। কারণ একটাই, এদের চেহারা উন্মোচন করতে হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে, জনগণের ভোটের অধিকারের স্বার্থে।

“সর্বশক্তি দিয়ে এরা ঢাকায় বিএনপির মেয়র আটকানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে কী ভূমিকা পালন করবে, তা ‘ক্লিন কাট’ বুঝিয়ে দিল।”

ইশরাক বলেন, “কোনো কথা চলবে না, যারা নিরপেক্ষতা শুধু বিসর্জন দিয়েছে নয়, বরঞ্চ একটি দলের প্রতিনিধির কাজ করেছে তাদের অবিলম্বে পদত‍্যাগ করতে হবে। এরা হাসিনার মতই বিচারকদের হুমকি দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করছে। উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে।

“আমলাতন্ত্র হাসিনার দোসরদের সঙ্গে নিয়ে লম্বা কুচক্র পরিকল্পনা করছে। একদিন এদের সবার নাম পরিচয় প্রকাশ পাবে।”

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

কাশিমপুর কারাগারে নুসরাত ফারিয়া

  বিনোদন ডেস্কঃ অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয়...