28 C
Dhaka
বুধবার, জুন ১৮, ২০২৫

ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কক্ষই কি ছাত্রদলের অস্থায়ী কার্যালয়?

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিমের কক্ষে ছাত্রদলের নিয়মিত আনাগোনা ঘিরে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বেগ ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, অধ্যাপক শরীফুল করিমের কক্ষ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মতবিনিময়, সাক্ষাৎ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ‘আস্তানা’তে পরিণত হয়েছে। বিষয়ে বিভাগের একাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থীর মন্তব্যে প্রকাশ, বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে এমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করছে।

বিষয়ে সত্যতা যাচাই করতে প্রতিবেদক নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালায় এবং দেখা যায়, ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন, সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার শাফায়েত সজলসহ নেতাকর্মীরা নিয়মিত সেখানে উপস্থিত থাকেন।

১৪ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিক্ষোভের পর তাঁরা দীর্ঘক্ষণ অধ্যাপক করিমের কক্ষে অবস্থান করেন। পরদিন ১৫ মে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ শিক্ষক সংগঠন ‘ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)’–এর কুবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহিন উদ্দিন। এরপর তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে অধ্যাপক করিমের কক্ষে উপস্থিত হন ছাত্রদলের নেতারা।

বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জানান, “নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই এমন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে ঘোরাফেরা আমাদের বিব্রত করে। শিক্ষক হিসেবে তিনি রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখবেন, সেটাই প্রত্যাশিত।”

অধ্যাপক করিমের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি কেউ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “স্যার আগে নিরপেক্ষ ছিলেন, এখন ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছেন। তাঁকে দেখে এখন মনে হয় ফুলটাইম রাজনীতিক, পার্টটাইম শিক্ষক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও ছাত্রদলের কর্মকাণ্ড চলছেই। জানা যায়, সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ নিজেকে অধ্যাপক করিমের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন এবং বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁকে সঙ্গও দেন।

বিষয়ে ছাত্রদলের মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, “আমি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করাটাই স্বাভাবিক। রাজনীতি ছাড়া কোনো আন্দোলন সম্ভব নয়, এটা সবাই জানে।”

অন্যদিকে অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করিম বলেন, “শুভ আমার ছাত্র। সে আসতেই পারে। আমার রুমে শুধু ছাত্রদলের না, অন্য দলের ছেলেরা কিংবা সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আসে। আমি কারও সঙ্গে রাজনীতি করি না, এটা অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার।”

তবে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কুবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ। কোনো শিক্ষক বা ছাত্র রাজনীতি করলে সেটি অনুচিত। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।”

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক শরীফুল করিমের বিরুদ্ধে অতীতেও শিক্ষক হেনস্তা, নিয়োগে অনিয়ম, এবং প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

ঐকমত্যের টেবিলে হাত মেলাল বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি নেতারা

  খবরের দেশ ডেস্কঃ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে বিরল এক দৃশ্যের জন্ম দিলেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির...