26 C
Dhaka
বুধবার, মে ২১, ২০২৫

‘করিডর’ নয়, আলোচনায় আছে ‘ত্রাণ চ্যানেল’ প্রস্তাব

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

 

খবরের দেশ ডেস্কঃ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সরবরাহের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ‘মানবিক করিডর’ দিচ্ছে—এমন খবরকে ভিত্তিহীন ও ‘অপপ্রচার’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ‘করিডর’ নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনা করেনি। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব এসেছে, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ত্রাণ সরবরাহের একটি ‘চ্যানেল’ গঠন। এই প্রস্তাবটি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।”

নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, “মানবিক করিডর নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। যার অস্তিত্ব নেই, তার বিষয়ে আলোচনা হবে কীভাবে?”তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই—করিডর নিয়ে আমরা কারো সঙ্গে কথা বলিনি, বলবও না। এটি নিয়ে যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

খলিলুর রহমান জানান, রাখাইন অঞ্চলে সংঘাত ও আরাকান আর্মির আগ্রাসনের কারণে জাতিসংঘ তাদের বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছাতে চায়। সেই প্রেক্ষাপটে একটি বিকল্প চ্যানেল ব্যবহারের প্রস্তাব এসেছে, যা এখনো সরকার পর্যায়ে আলোচনার মধ্যেই রয়েছে।

তিনি বলেন, “এই বিষয়ে সরকার এককভাবে নয়, দেশের সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে। এখনো বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তের পর্যায়ে আসেনি।”

মিয়ানমারে আরাকান আর্মির নৃশংসতা ও ‘এথনিক ক্লিনজিং’ নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “যদি তারা এই পথে হাঁটে, তাহলে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের বাণিজ্য বা সহায়তার প্রশ্নই ওঠে না।”

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, “কোনো রাষ্ট্র পাবলিক ডিপ্লোম্যাসির মাধ্যমে চলে না। সব কিছু প্রকাশ করা সম্ভব নয়। করিডর বিষয়ক যেকোনো পদক্ষেপে জাতিসংঘের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে, বাংলাদেশ কেবল সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। তবে মিয়ানমার আর্মি যদি এয়ার স্ট্রাইক বন্ধ না করে, তাহলে করিডর নিয়ে কোনো আলোচনা বা পদক্ষেপের প্রশ্নই উঠে না।”

ব্রিফিংয়ে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনের কথাও তুলে ধরেন খলিলুর রহমান। তিনি জানান, “গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বান জানানো হয়, যাতে ১০৬টি দেশ ইতোমধ্যে সমর্থন দিয়েছে। সম্মেলনটি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হবে।”

করিডর বিষয়ে প্রচারণার জন্য প্রতিবেশী একটি দেশের মিডিয়াকে দায়ী করে তিনি বলেন, “এই অপপ্রচারে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ নাকি আমেরিকার পক্ষ হয়ে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ করবে। এসব ভিত্তিহীন ও হাস্যকর দাবি। আমরা চীনের সঙ্গেও কথা বলছি, আমেরিকার সঙ্গেও—কোনো চাপেই আমরা নেই।”

সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের অবস্থান নিয়ে কোনো মতবিরোধ আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, “আমরা সবাই একই সমতলে কাজ করছি। সেনাপ্রধানের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ফরেন অফিসের সঙ্গেও সমন্বয় খুব ভালোভাবে হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা তাড়াহুড়া করছি না। আমরা চাই নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন। আজ ফেরত গিয়ে যদি রোহিঙ্গারা আবার নির্যাতনের শিকার হয়, সেটা আমরা কখনোই মেনে নেব না।”

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

আসিফ ও মাহফুজের পদত্যাগ চাই : ইশরাক

  খবরের দেশ ডেস্ক : অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগ...