Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় উন্মুক্ত করতে আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া। দুই দেশের মধ্যে শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট তৃতীয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে নিরাপদ অভিবাসন ও বৈধ প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
বুধবার (২১ মে) ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, যেকোনো সময় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে পারে। মালয়েশিয়া সরকারের ১৪ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নিতে মঙ্গলবার ঢাকায় আসে।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড. শাহরিন বিন উমর। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া।
বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল—অবৈধ অভিবাসন রোধ, মানবপাচার বন্ধ, স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা। মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে অবৈধ পথে শ্রমিক পাঠানো বন্ধে কঠোর অবস্থান জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, “গত বছরের বন্ধ শ্রমবাজারের কারণে প্রায় ৮ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি। তাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঠানো হবে।”
তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়া সরকার সীমিত সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। এ বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি মাল্টিপল অ্যান্ট্রি ভিসা প্রদানের বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।
সূত্র জানায়, অবৈধ পন্থায় কর্মী মালয়েশিয়ায় গেলে তারা আইনি জটিলতায় পড়ে, যা দুই দেশের জন্যই অস্বস্তিকর। তাই বৈধ পন্থায় পাঠানো কর্মীদের নিয়েই মূলত আগ্রহী দুই দেশ।
বায়রার এক নেতা বলেন, “বাজার খুললেই একটি চক্র বাধা দেয়, যারা অবৈধভাবে শ্রমিক পাঠানোর সঙ্গে জড়িত। এরা চায় না বৈধ প্রক্রিয়া সচল হোক, যাতে তাদের অবৈধ ব্যবসা টিকে থাকে।”
এদিকে, মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের যেসব মামলা হয়েছে, তা তাদের অভিবাসন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে মালয়েশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে শ্রমিক নিয়োগ চালু রাখা যায়।
বায়রার সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, “শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মসংস্থান ও কম খরচে বিদেশ যাওয়া নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে যেসব হয়রানিমূলক মামলা রয়েছে, সেগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি জরুরি, না হলে এজেন্সিগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না।”
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুই দিনব্যাপী এই বৈঠক শেষে একটি যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে নতুন করে কর্মী পাঠানো শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।