Your Ads Here 100x100 |
---|
অন্তর্বর্তী সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবিকে “স্বাভাবিক নয়” বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। পাশাপাশি তিনি সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজন হলে “কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার” কথাও বলেন। তবে সতর্ক করে দেন, “আরেকটি ওয়ান-ইলেভেনের পথ কেউ তৈরি করছে কি না” সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।ফেসবুক পোস্টে হাসনাত বলেন, “ছাত্র উপদেষ্টারা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চায়—এই গুজব ছড়িয়ে তাদের নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার চেষ্টা চলছে। এভাবে এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী আখ্যা দিয়ে একটি কলঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং উপদেষ্টা মাহফুজ আলম স্পষ্টভাবে ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫-এর মধ্যে নির্বাচনের সময়সীমা উল্লেখ করেছেন। সেই বাস্তবতায় ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করাকে তিনি “অগ্রহণযোগ্য” বলে আখ্যা দেন।
এদিকে সেনা সদর দপ্তরের এক অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধানের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে কোনো আলোচনায় তাকে রাখা হয়নি এবং মানবিক করিডর বা নির্বাচন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই হওয়া উচিত। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে হাসনাত বলেন, “আমাদের অবচেতনে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সালিশকারী হিসেবে ভাবার এক বিপজ্জনক প্রবণতা তৈরি হয়েছে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, “বিএনপি সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের ঐতিহাসিক শিকার। আমরা এখনো ওয়ান-ইলেভেনের ইতিহাস ও তারেক রহমানের নির্যাতনের কথা ভুলিনি।”
তবে একইসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রয়োজনে আমরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। কিন্তু গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের যে আশা থেকে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেখানে বাহিনী-নির্ভর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের বিচারের প্রশ্নে যাদের কাছে আমরা ঐক্য প্রত্যাশা করেছি, তাদের নির্লিপ্ততা আমাদের হতাশ করে। এখন প্রয়োজন সকল রাজনৈতিক শক্তির সম্মিলিত প্রয়াস—রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করে দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়া।”
হাসনাত তার পোস্টে আরও সতর্ক করে বলেন, “ক্ষণস্থায়ী ফায়দার আশায় যদি ২০২৪-এর অভ্যুত্থান-পরবর্তী সম্ভাবনাগুলো নষ্ট হয়, তাহলে তা হবে জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক ব্যর্থতা।”
তিনি আহ্বান জানান, “দেশীয় ষড়যন্ত্র এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আধিপত্যবাদবিরোধী ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শুদ্ধ গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হলে, রাজনৈতিক বিভাজন নয়—দায়িত্বশীলতা ও সংলাপ জরুরি।”
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী নিয়ে এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আলোচনায় আসেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এবারও তার বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।