Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ-২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত বিতর্কিত বিশেষ বিধানের বিরুদ্ধে রোববার রাজধানীর সচিবালয় চত্বরে নজিরবিহীন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মৌন মিছিল ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কয়েক হাজার কর্মচারী অংশ নেন। কর্মসূচির মূল দাবি ছিল—নতুন অধ্যাদেশ থেকে কালাকানুন বা কালোধারা বাতিল করা, যা কর্মচারীদের অধিকারের পরিপন্থী এবং কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের প্রতিফলন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয়ের বাদামতলায় ব্যানার-প্ল্যাকার্ডসহ কর্মচারীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর শুরু হয় মৌন মিছিল। তারা সচিবালয়ের প্রতিটি লেন ঘুরে কালাকানুন বিরোধী স্লোগানে মুখরিত করেন প্রশাসনিক চত্বর। কর্মচারী নেতারা অভিযোগ করেন, ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরির বিশেষ বিধান, যা দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক বাতিল হয়েছিল, তা আবারও নতুন অধ্যাদেশে পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলেন, এই ধরনের বিধান বাস্তবায়িত হলে কর্মচারীরা নাগরিক অধিকার হারাবেন, কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়বেন এবং নারী কর্মচারীরা সম্ভ্রম হারানোর আশঙ্কায় থাকবেন। প্রতিবাদ জানালে চাকরিচ্যুত করার সুযোগ রেখে যে অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হচ্ছে, তা অসাংবিধানিক এবং অমানবিক।
সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি মো. বাদিউল কবির ও কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম। তারা বলেন, এই কালাকানুন সরকারি চাকরিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার একটি হাতিয়ার। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোনো সরকার এমন কঠোর ও দমনমূলক আইন প্রণয়ন করেনি। নেতারা অভিযোগ করেন, সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে বসে কিছু আমলা ও চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থে এই বিধান জোর করে অনুমোদন করিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে দিয়ে জনগণের প্রশাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তারা।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে কর্মচারী নেতারা আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেন, তবে তিনি অফিসে উপস্থিত না থাকায় তারা আইন সচিবের সঙ্গে দেখা করেন। আইন সচিব তাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেন। পরে নেতারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মখলেস উর রহমানের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সচিব জানান, কোনো প্রকার আলোচনাবিহীনভাবে অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন হবে না। তার আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এদিকে, প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী প্রভাব বিস্তারকারী ও বিতর্কিত চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’ সোমবার সচিবালয়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কালাকানুন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কর্মচারীরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন—চাকরির নিরাপত্তা, মৌলিক অধিকার ও সম্মানের প্রশ্নে তারা কোনো আপস করবেন না।