28 C
Dhaka
শনিবার, মে ২৪, ২০২৫

চীনের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

 

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তান এবার কূটনৈতিকভাবে ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। ইসলামাবাদ এবার চীন ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছে। এতে করে প্রায় চার বছর পর পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিকরা।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানান, “আফগানিস্তান ও পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। নীতিগতভাবে তারা যত দ্রুত সম্ভব রাষ্ট্রদূত নিয়োগে রাজি হয়েছে। চীন এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।”

এই ত্রিপক্ষীয় আলোচনা এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত টানা চারদিন সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করেছে। দুই দেশই নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে কূটনৈতিক লড়াইয়ে নামে। চীন একদিকে শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও পাকিস্তানের প্রতি তাদের সমর্থন স্পষ্ট ছিল। এ সময় পাকিস্তান চীনের তৈরি যুদ্ধবিমান ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করে।

অন্যদিকে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারতের পাহেলগাঁও হামলার নিন্দা জানিয়ে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। মে মাসের শুরুতে তালেবানের এক উচ্চপদস্থ নেতা ইব্রাহিম সদর দিল্লি সফর করায় কাবুল-দিল্লি সম্পর্কের নতুন মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবানকে পাকিস্তানের মিত্র মনে করা হলেও, সম্প্রতি তাদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাকিস্তান অভিযোগ করছে, তালেবান সরকার সীমান্ত অতিক্রম করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (TTP)-সহ বিভিন্ন গোষ্ঠীকে পাকিস্তানে হামলা চালাতে দিচ্ছে। তালেবান এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও ২০২৪ সালে পাকিস্তানে ৫২১টি সন্ত্রাসী হামলা এবং চীনা প্রকল্পে কর্মরত অন্তত ২০ জন চীনা নাগরিকের মৃত্যু প্রমাণ করে যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

পাকিস্তান-চীন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফা হায়দার সৈয়দ বলেন, “ভারতের সঙ্গে সংঘাত চীন ও পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তানের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় এখন অত্যাবশ্যক।” অন্যদিকে কাবুলভিত্তিক বিশ্লেষক তামিম বাহিস মনে করেন, তালেবান এখন আঞ্চলিক সংযোগ ও বাণিজ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যা পাকিস্তানের কৌশলগত নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

চীন নিজেও আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী উদ্বেগে ভুগছে, বিশেষ করে পূর্ব তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ETIM)-এর কর্মকাণ্ড নিয়ে। এই গোষ্ঠী আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে চীনের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সবমিলিয়ে, বেইজিংয়ের এই কূটনৈতিক উদ্যোগ কেবল পাকিস্তান-আফগান সম্পর্ক নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। আসন্ন ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এই উদ্যোগ আরও দৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না: জামায়াত আমির

  খবরের দেশ ডেস্কঃ সংস্কারের আগে নির্বাচন করা হলে তাতে জনগণের আশা পূরণ হবে না বলে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...