28 C
Dhaka
সোমবার, জুন ৩০, ২০২৫

এবার ঝিনাইদহে ”ইত্যাদি”

জনপ্রিয়
 

- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
খবরের দেশ বিনোদন :
সেই নব্বই দশক থেকেই শেকড়ের সন্ধানে ইত্যাদি স্টুডিওর চার দেয়াল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তুলে ধরছে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রত্ননিদর্শন, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত সমৃদ্ধ জেলা ঝিনাইদহে। মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি খামার মহেশপুরের দত্তনগরের দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠের মাঝখানে বটবৃক্ষ চত্বরে।
ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে পুরো ঝিনাইদহ জুড়েই ছিল উৎসবের আমেজ।

 

অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বসে জমজমাট মেলা বসেছিল। হাজার হাজার মোটর সাইকেলের সারি। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানীরা।

মহেশপুরে ধারণ হলেও দর্শকরা আসেন ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা এবং যশোর থেকেও। বিকাল ৩টা থেকেই আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল। আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হন তাদের ভালোবাসার অনুষ্ঠান দেখার জন্য।
তবে সারাদিন রৌদ্রোজ্জ্বল থাকলেও অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগে থেকেই ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করে। এরপর শুরু হয় কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, কখনও ভারি বৃষ্টি। চলে টানা চার-পাঁচ ঘন্টা।

 

হঠাৎ এ ধরণের কালবৈশাখী ঝড় সম্পর্কে কোন রকমের পূর্বাভাস না থাকায় এক অনাকাংখিত পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয় ইত্যাদি দেখতে আসা দর্শক ও ইত্যাদির শিল্পী কলাকুশলীদের। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ইত্যাদির ধারণ সময়মত শুরু করা যায়নি, ফলে ধারণ হবে না ভেবে হাজার হাজার দর্শক বৃষ্টিতে ভিজেই ফিরে গেছেন।

আশেপাশে দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোন বাড়িঘর কিংবা আশ্রয়স্থল না থাকায় দর্শকরা যেমন কোথাও আশ্রয় নিতে পারেনি, তেমনি কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ইত্যাদির সেট, লাইট, ক্যামেরা ও অন্যান্য শুটিং সরঞ্জাম।
ঝড় থামার পর সীমিত সুবিধা নিয়েই রাত বারোটার দিকে শুরু হয় ইত্যাদির ধারণ, চলে একটানা ভোররাত পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মধ্যরাতে ইত্যাদির ধারণ শুরু হলেও প্রতিকূল আবহাওয়া, রাতের অন্ধকার, কর্দমাক্ত রাস্তা পার হয়ে হাজার হাজার দর্শক হাজির হন অনুষ্ঠানস্থলে, তাদের প্রিয় ইত্যাদির ধারণ ও এর প্রাণপুরুষ হানিফ সংকেতকে দেখার জন্য। দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত করতালি ও উচ্ছ্বাসপূর্ণ চিৎকারে রাতের নিরবতা ভেঙে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এবারের অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহের কিংবদন্তী লোককবি পাগলা কানাইয়ের কথা ও সুরে একটি লোক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী ও তসিবা। গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন মেহেদী। খ্যাতিমান গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায় কিশোর দাশের সুর ও সংগীত পরিচালনায় আর একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ঝিনাইদহের সন্তান জনপ্রিয় শিল্পী মনির খান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের শুরুতেই রয়েছে ঝিনাইদহকে নিয়ে ঝিনাইদহেরই শৈলকুপার সন্তান মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় শতাধিক নৃত্যশিল্পী। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছে মোহাম্মদ শাহিন ইসলাম, কণ্ঠ দিয়েছেন রাজিব ও তানজিনা রুমা। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীত আয়োজন করেছেন মেহেদী।
দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান ঝিনাইদহকে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে ৪জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা ঝিনাইদহের ব্র্যান্ডিং পণ্য কলা ও পান নিয়ে রচিত একটি নাট্যাংশে স্থানীয় ভাষায় অভিনয় করেন। যা ছিল বেশ উপভোগ্য।
শেকড় সন্ধানী ইত্যাদি সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণে নিবেদিত মানুষদের তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অচেনা-অজানা বিষয় ও তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রচার করে আসছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয় ছোঁয়া প্রতিবেদন। রয়েছে ঝিনাইদহের উপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।
এছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও প্রসঙ্গ নিয়ে সামাজিক অসঙ্গতি ও সমাজ সংস্কারের উপর রয়েছে বেশ কিছু তীক্ষ্ণ ও তীর্যক নাট্যাংশ। পোস্টার নির্যাতন, দালালের দৌরাত্ম্য, স্বভাব সংস্কার, প্রবাদ-প্রবচনের পেছনের গল্প, ফেসবুকের সংবাদ সেবা, স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা, ঘরোয়া আলোচনায় পশু-পাখি প্রীতি, রাজনৈতিক দল গঠনের হিড়িকে নাম সংকট, দোষ খুঁজে দোষ ধরা, কথা শুনে অযথা ব্যথাসহ বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।
এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-বাবুল আহমেদ, আবদুল্লাহ রানা, আব্দুল আজিজ, সুভাশিষ ভৌমিক, আমিন আজাদ, আঞ্জুমান আরা শিরিন, রকি খান, জিল্লুর রহমান, কামাল বায়েজিদ, মুকিত জাকারিয়া, জাহিদ শিকদার, আশরাফুল আলম সোহাগ, আনোয়ার শাহী, নজরুল ইসলাম, আনন্দ খালেদ, সুমন পাটোয়ারি, শাহেদ আলী, সুজাত শিমুল, তারিক স্বপন, আনোয়ারুল আলম সজল, সাইদুর রহমান পাভেল, বেলাল আহমেদ মুরাদ, মনজুর আলম, বিলু বড়ুয়া, মতিউর রহমান, রাজীব সালেহীন, সাদিয়া তানজিন, সাবরিনা নিসা, সুর্বনা মজুমদারসহ আরো অনেকে। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম।
গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির এই পর্বটি আগামী ৩০ মে, শুক্রবার-রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

ট্রাম্পের ‘বড়, সুন্দর’ বিলের প্রস্তাবই বাড়াবে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের ঝুঁকি

  আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন সিনেটে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘বড়, সুন্দর’ করছাড় ও ব্যয় বাড়ানোর বিল পাশের প্রক্রিয়ায় থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মার্কিন...