28.6 C
Dhaka
রবিবার, জুন ২২, ২০২৫

ছোট হচ্ছে রুটি-বিস্কুট, বাড়ছে শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

 

খবরের দেশ ডেস্কঃ

খেটে খাওয়া মানুষের নিত্যদিনের খাবার কেক, বিস্কুট, পাউরুটির দাম বেড়েছে একের পর এক ধাপে। কখনো বাড়ছে দাম, কখনো কমছে পরিমাণ—কিন্তু কমছে না ভোগান্তি। ২০২২ সালের জুনে এক লাফে ২০ শতাংশ দাম বাড়ানোর পর থেকে থামেনি এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা। খোলা বিস্কুটের দাম এখন ন্যূনতম পাঁচ টাকা, যা একসময় ছিল দুই-তিন টাকা। অথচ এসব পণ্যের মান বা পরিমাণ কোনোভাবেই বাড়েনি, বরং অনেকক্ষেত্রে তা কমে গেছে।

রাজধানীর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মো. ওয়ালিউল্লাহ। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সরকার তো রুটি–কেকের দাম বাড়ায়নি। কারখানার লোকেরা তাদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে, আবার পরিমাণও কমিয়ে দিচ্ছে। এগুলো খাওয়ার চেয়ে পরোটা খাওয়া ভালো।’

এই অবস্থা শুধু ওয়ালিউল্লাহর নয়। রিকশাচালক ফজল হোসেন বলেন, ‘আগে একটা পাউরুটি খেয়ে পেট কিছুটা ভরত, এখন আর পেট ভরে না। রুটি ছোট হয়ে গেছে।’

ভ্যাট বাড়ে, ভোগান্তিও বাড়ে

চলতি বছরের জানুয়ারিতে কেক–বিস্কুটের ওপর আরোপ করা হয় বাড়তি মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)। যদিও প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর দাবি, তারা তখন পণ্যের দাম বাড়ায়নি। তবে প্যাকেটের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগ আছে ভোক্তাদের। ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব–এর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘ভ্যাট আরোপের পর প্রতিটি কোম্পানি হয় পণ্যের পরিমাণ কমিয়েছে, নয়তো দাম বাড়িয়েছে। গরিবের খাবারে অতিরিক্ত কর আরোপ অন্যায়।’

বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা আগামী বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করব। ভ্যাট কমানো না হলে দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় থাকবে না।’

গরিববিরোধী’ নীতির অভিযোগ

অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘রাজস্ব বাড়ানোর পরিকল্পনা এলেই দরিদ্র মানুষের পণ্যের ওপর নজর পড়ে। এটা একটি গরিববিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি। এর প্রভাব পড়ছে পুষ্টি ও জীবনমানের ওপর।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজস্ব দরকার, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তার জন্য দরিদ্র মানুষের সাশ্রয়ী খাবারে কর আরোপ কেন?’

মূল্যস্ফীতির চাপে বিপর্যস্ত নিম্নবিত্ত

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৬৩ শতাংশ। আর সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯.১৭ শতাংশে পৌঁছেছে।

একই সঙ্গে ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক পরিচালিত জরিপ বলছে, দেশের রিকশাচালক, দিনমজুর, শিক্ষার্থীসহ নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের ৯৯ শতাংশ অর্থাভাবে ভারী খাবার বাদ দিতে বাধ্য হয়েছেন। ৬০ শতাংশ সকালের নাশতা বাদ দেন। কেউ কেউ পুরো একটি বেলার খাবারও বাদ দেন।

জরিপে অংশ নেওয়া ৯০৪ জন জানিয়েছেন, তারা বোতলজাত পানি কিনতে পারেন না। ৭০১ জন বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাটের হার অস্বাভাবিক বেশি। ১৯৩ জন বলছেন, ধনীদের ওপর কর বাড়ানো হোক, আর গরিবদের পণ্যে ভর্তুকি দেওয়া হোক।

করনীতি বদলানো না গেলে সংকট ঘনাবে

বিশ্লেষকদের মতে, ভ্যাট ও শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনা না করলে সাশ্রয়ী খাবারও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে। একমাত্র নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সদিচ্ছা থাকলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

 

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

রেচি তখন মুচকি হেসে বলল এখন কি আর অটোগ্রাফের যুগ আছে ?

বিনোদন ডেস্ক : দীর্ঘ 8 ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর ম্যাডামের সাথে একটা ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছিলাম। টিভিতে তার অনেক...