| Your Ads Here 100x100 |
|---|
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের জেলা জুড়ে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও হিমেল বাতাসে জনজীবন নাকাল। বিশেষ করে কষ্ট বেড়েছে চরের বাসিন্দাদের। স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে তাদের।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলায় কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশার তেমন ঘনত্ব না থাকলেও ঠান্ডা বাতাসের দাপটে জেলায় বিশেষ করে চরাঞ্চলগুলোতে শীত অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ১৬ নদনদীর তীরবর্তী ৮৫০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত কুড়িগ্রামের ৪৬৯টি চরের মধ্যে ২৬৯টিতেই মানুষের বসবাস। এসব চরের অধিকাংশই শীতপ্রবণ হওয়ায় হিমেল বাতাসে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা।
বিশেষ করে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী ঝুনকার চর, কালির আলগা, গোয়াইলপুরী, ভগবতীপুর, পোড়ার চরসহ ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও চররাজিবপুর উপজেলার চরে শীতের তীব্রতা কয়েক গুণ বেশি।
এরমধ্যে বৃদ্ধ, শিশু ও দিনমজুররা বেশি বিপাকে পড়েছেন। শীতের কারণে দিনমজুরদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কষ্টে দিন কাটছে তাদের।
ঝুনকার চর এলাকার বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী মোঃ মুনসুর আলী বলেন, আমরা গরীব মানুষ। ঘরে পরার মতো মোটা কাপড় নাই। রাতে ঘুমাইতে গেলে ঠান্ডায় শরীর জমে যায়।
কালির আলগার গৃহবধূ মোছাঃ হালিমা বেগম বলেন, শীতের কাপড় পাই না। কেউ খোঁজও নেয় না আমাদের।
পোড়ার চর এলাকার দিনমজুর মোঃ আব্দুল মালেক জানান, হাওয়ার ধমক এমন যে নদীর পাড়ে দাঁড়ানো দায়। কাজকর্ম বন্ধ। ঘরে খাবার নাই। শীত আমাদের মারে, অভাবও মারে।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আগামী সাত দিন কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির আশপাশে উঠানামা করতে পারে। ফলে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে।
কুড়িগ্রাম জেলা চর উন্নয়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, কুড়িগ্রামে প্রায় শতাধিক এনজিও কাজ করলেও শীতের সময় তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকে। সাড়ে পাঁচ লাখ চরবাসীর দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। তারা যেন ভিনগ্রহের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে সরকারি সহায়তা ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মতিন বলেন, কুড়িগ্রাম জেলায় শীত নিবারণে ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় শীতবস্ত্র কেনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শিগগিরই শীতার্ত মানুষের মধ্যে সেগুলো বিতরণ করা হবে।
বিভিন্ন চরাঞ্চলে শীতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই দ্রুত পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ ও স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

