Your Ads Here 100x100 |
---|
মোগলাবাজারের একটি রিসোর্টে বেড়াতে আসা আট তরুণ-তরুণীকে অসামাজিক অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয়রা ধরে কাজী ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় রিসোর্টের একটি অংশে অগ্নিসংযোগও করা হয়। রিসোর্টটি পরে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

রোববার (১৯ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুরে সিলেটের মোগলাবাজার থানা এলাকার রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল যে, রিসোর্টে ঘুরতে আসা আট তরুণ-তরুণী অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছিলেন। অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয়রা রিসোর্টের ভিতরে ঢুকে তাদের আটক করে। এরপর তারা কাজী ডেকে বিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করেন।
এ সময় রিসোর্টের একটি অংশে অগ্নিসংযোগও ঘটনা ঘটে । আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনার পর রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ রোববার বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ঘোষণা দিয়ে রিসোর্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াছিন আহমেদ ফাহিম জানান, ঘটনার দিন সকালে রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে ১০টি যুগল আসলে তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়া হলে, যারা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে দায়িত্ব না নেওয়া চারটি যুগলকে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়।

মোগলাবাজার থানার ওসি মো. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বিকালে বলেন, “সকালে স্থানীয় লোকজন অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে রিসোর্টে উপস্থিত হন। এ সময় কিছু ব্যক্তি রিসোর্টে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের বিয়ের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে স্থানীয় জনগণ তাদের আটক করেছে; তবে তারা আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি।’ একই সময়, রিসোর্টে থাকা আট তরুণ-তরুণীকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে যানা গিয়েছে
কাজী আব্দুল বারী বলেন এলাকাবাসী ছেলেমেয়েদের আটক করেন। তারপর আমাকে খবর দিয়ে নেওয়া হয়। তখন এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে চার ছেলে ও চার মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি বিয়ের দেনমোহর ১০ লাখ; আরেকটির দেনমোহর ১২ লাখ টাকা। এসব ছেলে-মেয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ, মোগালাবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও দুক্ষিণ সুরমার এলাকার বাসিন্দা বলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন।
এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা এবং স্থানীয়দের ক্ষমতা প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্থানীয় জনগণের হাতে আইন প্রয়োগের ঘটনা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এবং এটি আইনের শাসনের প্রতি আস্থা কমিয়ে দেয়।

এ ঘটনার পর সিলেটের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে আরও প্রশ্ন উঠতে পারে, যা সামনে তদন্তের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করে।