Your Ads Here 100x100 |
---|
বাংলাদেশের জন্ম ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সত্যকে স্বীকার করেই এ দেশে রাজনীতি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা যারা করেছেন, তারা অতীতে পরাজিত হয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও পরাজিত হতে বাধ্য।
আজ মঙ্গলবার এক ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী ঘটনা বা ইতিহাস নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করা যেতে পারে। তবে তা হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের সত্যতা মেনে নিয়েই। তিনি আরও যোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনাবলি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতে পারে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি বা তাৎপর্যকে অস্বীকার করা যাবে না।
একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি লেখেন, “শেখ মুজিবুর রহমানের ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠা নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি। উনি ফ্যাসিস্ট ছিলেন। তবে বাংলাদেশের জন্মে তার অবদান অনস্বীকার্য। তাই আমরা ১৯৭২-পূর্ব শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রাপ্য গুরুত্ব দেব।”
তিনি আরও বলেন, “কিছু মুক্তিযোদ্ধা ফ্যাসিস্ট কিংবা অন্যায় আচরণ করতে পারেন। কিন্তু মুমুক্তিযুদ্ধের চেতনা । কিছু ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের জন্য মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা বা প্রশ্নবিদ্ধ করা রাষ্ট্রের ভিত্তির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।”
মাহফুজ আলম আরও উল্লেখ করেন, “মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী ১০ বছরের ইতিহাস আসলে দুই শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধার লড়াইয়ের ইতিহাস—একদিকে ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী মুক্তিযোদ্ধারা এবং অন্যদিকে ভারতবিরোধী দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা। তবে কোনো পক্ষই মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা অস্বীকার করেনি।”
বাংলাদেশের জন্মের ভিত্তি ও মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে স্বীকার করে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি এ ভিত্তি অস্বীকার করা হয়, তাহলে আমরা আপনাদের বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি হিসেবে গ্রহণ করব না।”
তিনি ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানকে ‘ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী প্রকল্পের’ বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক প্রতিরোধ হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, এই অভ্যুত্থান মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতারই অংশ, যা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা পুনরুদ্ধার করেছে।
মুক্তিযুদ্ধপন্থী হওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি লেখেন, “যদিও অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট ও স্বার্থান্বেষী হয়ে উঠেছিলেন, তাদেরকে ছাত্র-জনতার কাছে পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে। ভবিষ্যতেও যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, তারা জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হবে।”
জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, “আমরা অতীতে বিরোধ নিষ্পত্তি করে মীমাংসার পথ খুঁজেছি। কিন্তু কিছু পক্ষ দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আপনাদেরও উচিত ইতিহাসের সঠিক পক্ষে থাকা এবং জাতিকে বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করা। ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের চেতনা মেনে নিয়ে আমাদের একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।”