Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
বহু নাটকীয়তার পর অবশেষে আগামী ২৫ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ থেকে এগিয়ে এনে আগামী ২০ আগস্ট উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু। সোমবার রাতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত এক পত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী।
এর আগে, গত ৪ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী সেতু পরিদর্শনে এসে সেতুটি জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে জুলাই মাসেই উদ্বোধন করার কথা বলেছিলেন। এরপর গত ১৩ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ২ আগস্ট সেতুটি উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সেতু উদ্বোধনের অন্তিম মুহূর্তে তারিখ পিছিয়ে ২৫ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এরপর সবশেষ উদ্বোধনের তারিখ এগিয়ে এনে আগামী ২০ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়।
গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, আগামী ২৬ আগস্টের পরিবর্তে ২০ আগস্ট তিস্তা সেতু উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সেতুর লাইটিং ও রংয়ের সব কাজ শেষ। এদিন থেকেই কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার মানুষের মধ্যে সড়কপথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন হবে।
তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় তিস্তা সেতু দুই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ছাড়াও উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া কুড়িগ্রাম থেকে গাইবান্ধা হয়ে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার কমে আসবে। এতে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত সময় সাশ্রয় হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সেতুর উদ্বোধন করবেন বলেও তিনি জানান।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি নির্মিত হয়েছে সৌদি সরকারের অর্থায়ন এবং চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে। ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার সেতুটি বাস্তবায়নে সরাসরি তদারক করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। দেশের ইতিহাসে এটিই এলজিইডির সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
সেতুটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রায় ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু। সেতুটিতে ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। সংযোগ সড়কটি হরিপুর, বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর ও ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার ও মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে পুরো গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারী অঞ্চল। এছাড়া ভাঙ্গন রোধে সেতুর পাশাপাশি এর উভয়পাশে স্থায়ীভাবে নদী শাসন করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। এরপর ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর সেতুটি পরিদর্শনে আসেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ। সে সময়ে তিনি ২০২৫ সালের মার্চে সেতুটি উদ্ধোধন হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর ২৫ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সেই তারিখ এগিয়ে এনে ২০ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।