| Your Ads Here 100x100 |
|---|
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি :
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরের ২০১৭-২০১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী জিতু রায় সাবেক প্রেমিকার উদ্দেশ্য তিন পৃষ্ঠার চিঠি লিখে নিজ বাড়ির সামনে আম গাছে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
জিতু রায় ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন । তার বাড়ি পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ উপজেলায়।
গত ১৪ আগস্ট ২০২৫ জিতু রায়ের নিজে হাতে লেখা তিন পৃষ্ঠার চিঠিতে পাওয়া যায় স্বপ্না নামে এক মেয়ের সাথে তার প্রথম কথা হয় ২০১৯ সালে । চিঠি থেকে জানা যায় ২০২২ সালে স্বপ্না রংপুরে এডমিশন কোচিং করতে এসেছিল এবং তাকে প্রেমের নিবেদন জানিয়েছিল দুজনের সম্মতিতে তাদের প্রেম শুরু হয় ।
হাতে লেখা চিঠিতে জিতু আরো বলেন ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমাদের মাঝে অনেক কিছু হয়ে যায়। দীর্ঘ চার বছরে চিকলি ওয়াটার পার্ক, রংপুর চিড়িয়াখানা, ঘাগট,বেগম রোকেয়র বাড়ি , দেবিগঞ্জ ও পঞ্চগড়ের বিভিন্ন পার্কের তাদের অনেক স্মৃতি আছে যা ভুলতে পারছিনা। নীলসাগর ও ঘাগটে তুমি যা করেছিলে সেগুলো ভোলার মতো না।তিনি আরো বলেন তোমার সাথে আমার অনেক বার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল যা তুমি অস্বীকার করতে পার না।
চিঠিপত্রের শেষে তিনি বলেন তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি অনেক কিছু করেছি কিন্তু দিন শেষে তুমি প্রমাণ করে দিলে তুমি আমার জীবনে সুখের জন্য আসনি। আমার জীবনকে গলা টিপে হত্যা করার জন্য আসছিলে। তুমি অন্য জনের সাথে রিলেশনশিপে জড়ালে বিয়ে ঠিক করলে তবুও তুমি আমাকে বুঝতে দিলে না। তোমার বিয়ে হচ্ছে অনেক কষ্টে আমি জানতে পারি। তোমাকে অনেক বার অনুরোধ করেছিলাম আমার জীবন ধ্বংস করে যেও না তবু তুমি বিয়ের তারিখ মিথ্যা বলে চলে গেলে। তোমাকে মৃত্যুর পরে ভালোবেসে যাব । তুমি আমার সাথে প্রতারণা করতে পারলেও আমি তোমাকে ভুলতে পারিনি। আজকে আমার মৃত্যুর জন্য তুমি দায়ি শুধু তুমি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাকিবুল হাসান মুন্না বলেন বেরোবি শিক্ষার্থী জিতু রায়ের রেখে যাওয়া চিঠিটি পড়লাম এবং বুঝলাম এটি বর্তমান সময়ের নির্মম বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। তিনি জানতেন আত্মহত্যা মহাপাপ, জানতেন পরিবারের জন্য বেঁচে থাকা জরুরি। তবুও ভেতরের যন্ত্রণায় তিনি নিজেকে হারিয়ে ফেললেন। তার চিঠিতে ফুটে উঠেছে এক ধরনের স্পর্শকাতর সত্য, যা আমাদের সমাজের বর্তমান প্রজন্মের প্রেমজীবনের করুণ চিত্র তুলে ধরে। আজকাল দেখা যায়, প্রেমের নামে সম্পর্ক গড়ে ওঠে কিন্তু সেই সম্পর্কের ভেতরে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কও চলে আসে। এরপর হঠাৎ করেই ছেলে মেয়েকে ছেড়ে যায় কিংবা মেয়ে ছেলেকে ছেড়ে চলে যায়। অথচ কেউ কারও জীবনে চিরদিনের জন্য স্থায়ী হয়ে থাকতে পারে না। শেষ পর্যন্ত সবকিছু ভেঙে গিয়ে থেকে যায় শুধু ক্ষত আর বেদনা। তাহলে দোষ দেবো কাকে? দোষ এখানে কারো নয়, দোষ দিতে হবে এই সময়কে, এই প্রজন্মের অসচেতনতা আর অস্থিরতাকে। যেখানে সম্পর্কের গভীরতা, বিশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি হারিয়ে গিয়ে সবকিছু ভেসে যাচ্ছে ক্ষণস্থায়ী আবেগ আর প্রলোভনের স্রোতে।

