প্রতিবন্ধীদের সেবা দেওয়ার জন্য ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এই প্রতিষ্ঠানের নামে ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে ৪৪৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পুতুলের বিরুদ্ধে। এ কারণে মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার মামলাটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল মঙ্গলবার কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি করা হবে। সোমবার এক ব্রিফিংয়ে দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মামলায় সূচনা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হবে। এর মধ্যে ১১ জন ট্রাস্টি, ফাউন্ডেশনের দাতা আট ব্যবসায়ী ও বেআইনিভাবে কর সুবিধা দেওয়ায় রাজস্ব বিভাগের ১৬ কর্মকর্তা রয়েছেন। দাতাদের মধ্যে তিনজন মারা যাওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি।
আট দাতা ব্যবসায়ী
হামিদ রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান ইন্তেকাবুল হামিদ, সাবেক মন্ত্রী ও সানোয়ারা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বিএসসি, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আজিজ খান, এপেক্স প্রোপার্টিজ ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান এ কে এম রহমতুল্লাহ, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দীন হাসান রশিদ, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও বিল ট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েতুর রহমান।
এনবিআরের ১৬ কর্মকর্তা
মো. নজিবুর রহমান, মীর মুস্তাক আলী, চৌধুরী আমির হোসেন, পারভেজ ইকবাল, মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. ফিরোজ শাহ আলম, ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ড. মাহবুবুর রহমান, মো. লোকমান চৌধুরী, মো. রেজাউল হাসান, মো. জিয়া উদ্দিন মাহমুদ, আব্দুর রাজ্জাক, এ এফ এম শাহরিয়ার মোল্লা ওরফে আবু ফয়সাল মো. শাহরিয়ার মোল্লা, সুলতান মো. ইকবাল, তন্দ্রা সিকদার ও কালীপদ হালদার। তারা এনবিআরের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা।
যে কারণে মামলা
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, সায়মা ওয়াজেদসহ অভিযুক্তরা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গঠন করে এনজিও-বিষয়ক ব্যুরো ও সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নেন। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে তাদের কাছ থেকে অনুদানের নামে ঘুষ আদায় করেন। ওই টাকা প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেছেন।
বলা হয়, সূচনা ফাউন্ডেশনের অনুকূলে জমা হওয়া টাকার বিষয়ে আয়কর মওকুফ করা হয়। এর মাধ্যমে নিজে লাভবান হওয়া ও অন্যকে লাভবান করার সুযোগ দেওয়া হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশ করেছেন। অসদাচরণ এবং বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে আদায় করেছেন ৪৪৭ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৯৯ লাখ চার হাজার টাকার কর আত্মসাৎ করেছেন।