জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবার বর্ষা মৌসুমে (খরিফ–২) হাইব্রিড কাঁচামরিচ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন ভালো হওয়ার পাশাপাশি বাজারে দামও অনুকূলে থাকায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। লাভজনক এ চাষাবাদের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন জেলার অনেক কৃষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার চরাঞ্চলসহ নয়টি উপজেলায় ২১৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও, কৃষকেরা এবার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে চাষ করেছেন। প্রায় দুই মাস আগে হাইব্রিড জাতের ‘ফায়ার বক্স’, ‘বিজলী’, ‘সনি’, ‘মানিক’ ও ‘চাটমোহরি’ জাতের মরিচ বপন করেন কৃষকেরা।
যমুনা নদীর তীরবর্তী কাজিপুর, শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলে সর্বাধিক চাষ হয়েছে। এর মধ্যে কাজিপুর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে ‘বিজলী’ ও ‘চাটমোহরি’ জাতের মরিচের আবাদ বেশি দেখা গেছে। ইতোমধ্যেই কৃষকেরা এসব ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, চরাঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা ভালো দামে মরিচ কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন। বর্তমানে স্থানীয় হাট–বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে কয়েকদিন আগেও খুচরা বাজারে দাম ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস. এম. নাসিম হোসেন বলেন, “খরিফ–২ মৌসুমে হাইব্রিড মরিচ সাধারণত উঁচু জমিতে চাষ করা হয়। এবার সদর উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪৫ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৭ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত উৎপাদন হচ্ছে। আরও দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ চলবে।”
তিনি আরও বলেন,“টানা কয়েক সপ্তাহের অতিবৃষ্টিতে কিছু ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কৃষকেরা এখন পুনরায় চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই নতুন আবাদ শুরু হবে। ফলে প্রায় বছরজুড়েই হাইব্রিড মরিচের চাষ চলে।”
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক এ. কে. এম. মঞ্জুরে মওলা বলেন, “প্রতিবছরই এ মৌসুমি মরিচের চাষ থেকে কৃষকেরা ভালো লাভ পান। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। বাম্পার ফলন ও ভালো বাজারদর—দুটোই কৃষকের সন্তুষ্টি বাড়িয়েছে।”