27 C
Dhaka
বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫

তথ্য সংগ্রহে হাসপাতালে সাংবাদিককে বাধা ও মানববন্ধন; সংবাদ প্রকাশে পরিদর্শনে ইউএনও ও ওসি

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিক হেনস্থার শিকার হন। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ ও সংবাদ প্রকাশের পর সোমবার (০৩ নভেম্বর) হাসপাতাল পরিদর্শন করেন ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্র ও ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল হেলাল মাহমুদ। তারা জরুরি বিভাগ, ল্যাব কক্ষসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করেন।

হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ২০ ও ২১ অক্টোবর হামলার শিকার ও মিথ্যা প্রচারণার শিকার হন “তালাশ বিডি” ও “উলিপুর ডট কম”-এর নির্ভীক সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম। পরে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের ও সংবাদ প্রকাশ করলে, অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভুয়া প্রচারণা চালানো হয়। তাঁকে “ভুয়া সাংবাদিক”, “চাঁদাবাজ” ও “তথ্য সন্ত্রাসী” আখ্যা দিয়ে ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সকালে হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ আরিফুল ইসলাম আপেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বহিরাগত কয়েকজনকে নিয়ে হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেন ও বক্তব্য প্রদান করেন, যা চাকরি নীতিমালা পরিপন্থী।

মানববন্ধনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল, স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে। অনেকেই মানববন্ধনকারীদের ছবি ক্রস চিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

ভূরুঙ্গামারীর সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেন, “মাইদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তাঁর সাহসী সংবাদ অনেক প্রভাবশালী দালালচক্রকে অস্বস্তিতে ফেলেছে, তাই তারা মিথ্যা প্রচারণার আশ্রয় নিয়েছে। মাইদুলকে সহযোগিতা করা সকলের কর্তব্য।”

পরিদর্শনের সময় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্র বলেন, মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে জরুরি বিভাগের সামনে পার্কিং এলাকা মুক্ত রাখতে একজন কর্মী রাখার নির্দেশনা দেন এবং অফিস সময়ের মধ্যে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের নির্ধারিত দিন ও সময় ছাড়া হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অবস্থান না করার নির্দেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি দালালচক্র নির্মূলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও নির্দেশ দেন।

ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল হেলাল মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে সুচিকিৎসা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। এখানে চিকিৎসা নিতে আইনি কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম পরিদর্শনে সার্বিক সহযোগিতা করেন। তিনি জানান, ল্যাবে সীমিত খরচে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এছাড়া, টাইফয়েড ভ্যাকসিনের ৭০ হাজার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইপিআই সেন্টার, স্কুল ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা ও নিবন্ধন কার্যক্রম জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, ভূরুঙ্গামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস. এ. খোকন, দৈনিক সকালের সময়ের প্রতিনিধি এস. এম. মহিবুল নঈম শিমন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোবাশ্বের হোসেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও সাংবাদিকরা।

স্থানীয় সচেতন মহল প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন— হাসপাতালের মতো জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দালালচক্রের প্রভাব রোধ, বাহিরে ওষুধ বিক্রি বন্ধ, ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদান বন্ধ এবং রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি হাসপাতালের সমস্যা জনসম্মুখে প্রকাশের সময় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

৩৬ বছরের শিক্ষকতার ইতি টানলেন শায়েস্তা খাতুন

প্রধান শিক্ষক শায়েস্তা খাতুনের চাকরিজীবনের শেষ দিন। তাঁকে বিদায় জানাতে এসেছেন শিক্ষক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এবং এলাকার সাধারণ...