27 C
Dhaka
সোমবার, মার্চ ১৭, ২০২৫

শিবিরের সাবেক নেতাদের হাত ধরে: অভ্যুত্থানের ছাত্র দলের উত্থান

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতাদের উদ্যোগে আগামী এপ্রিলে একটি নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আসছে, যা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলে রূপ নিতে পারে। ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্ল্যাটফর্মের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটিতে (জানাক) অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে শিবিরের সাবেক নেতারাও যুক্ত ছিলেন। তবে এনসিপির শীর্ষ পদ নিয়ে বিরোধের কারণে তাদের একটি অংশ আলাদা হয়ে যায়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের দাবিতে তাদের নেতৃত্বে নতুন একটি রাজনৈতিক দল আসছে।

ঘোষণাপত্রে যুক্ত করা গ্রাফিতিতে দু’জন তরুণীসহ ছয়জনের মুখচ্ছবি রয়েছে। নারীদের একজন হিজাব পরা, অন্যজনের মাথা খোলা। তরুণদের একজন দাড়ি-টুপি ও জোব্বা পরা, অন্যজন আদিবাসী। জামায়াতে ইসলামির মতো ধর্মভিত্তিক নয়, এই উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্যপন্থি দল গঠনের আভাস দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে প্ল্যাটফর্মটি। জনগণ চাইলে এটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে। শুধু সাবেক শিবির নয়, সব মতের মানুষের জন্যই এটি উন্মুক্ত থাকবে। শিবির ‘ট্যাগিং’-এ এনসিপিতে যাদের জায়গা হয়নি, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুত ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ পূরণের সম্ভাবনা না থাকায় যারা এনসিপিতে যোগ দেননি, তাদের নিয়ে হবে এই প্ল্যাটফর্ম। সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হবে।

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনের শুরু হয়। এতে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষও রাজপথে নামেন। আন্দোলন অভ্যুত্থানে রূপ নিলে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান অনুযায়ী, অভ্যুত্থান দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সহযোগীর ভূমিকায় ছিল আওয়ামী লীগ, এবং অপরাধের মূল হোতা ছিলেন শেখ হাসিনা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা সামনের সারিতে থাকলেও নেতৃত্বে ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারাও ছিলেন। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। শেখ হাসিনা আমলের শেষ দিকে নিষিদ্ধ হওয়া শিবির নেতারা সাংগঠনিক পরিচয়ে ছিলেন না আন্দোলনে।

অভ্যুত্থানের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, শরফুদ্দিনসহ অন্তত ৩০ নেতা যোগ দেন জানাকে। তারা আলী আহসান জুনায়েদকে এনসিপির সদস্য সচিব পদে চেয়েছিলেন। ছাত্রশক্তি, ছাত্র অধিকার, ছাত্রলীগের পক্ষত্যাগী এবং বাম সংগঠন থেকে আসা নেতারাও নিজ নিজ বলয় থেকে শীর্ষ পদ চেয়েছিলেন।

এ বিরোধে সাবেক শিবির নেতারা এনসিপিতে যোগ দেননি। যোগ না দেওয়া নেতাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ আমলে শিবির হত্যাকে যেভাবে বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, নতুন দলেও শুধু অতীতে শিবির সংশ্লিষ্টতার কারণে নেতৃত্বে আসতে দেওয়া হয়নি। ট্যাগিংয়ের রাজনীতি অব্যাহত রাখা হয়েছে।

রাফে সালমান রিফাত জানাকের যুগ্ম সদস্য সচিব ছিলেন। নতুন প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, এনসিপি গঠন প্রক্রিয়ায় অনেক কিছুই ন্যায্য হয়নি। শুধু সাবেক শিবির নয়, কওমি মাদ্রাসা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকে তা মনে করেন। তাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণা করবে, এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। যা রাজনৈতিক প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। ঈদের পর পর জনগণের কাছে যাবে। জনগণ গ্রহণ করলে, রাজনৈতিক দল গঠিত হতে পারে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জানাকের সর্বশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয় কেন্দ্রীয় কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে বিলুপ্ত হবে। তাই জানাক আর কার্যকর নয় জানিয়ে রাফে সালমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের আরেক সাবেক সভাপতি মির্জা গালিবসহ যারা অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিলেন, তারাও নতুন প্ল্যাটফর্মে থাকবেন।

প্ল্যাটফর্মের ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ, ধর্মবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়ামুক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এবং আধিপত্যবাদের বিপক্ষে কার্যকর অবস্থান—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও সম্মান দেওয়া এখনও অসম্পূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থ

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

বরগুনার আমতলীতে ওরস চলাকালে মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন

বরগুনার আমতলীর ইসমাইল শাহ মাজারে বার্ষিক ওরস চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মাজারের ভেতরের সামিয়ানা...