30 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

জ্বালানি খাতের বৈদেশিক দেনা চলতি বছরেই মধ্যেই পরিশোধ করতে চায় সরকার

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
নিউজ ডেস্ক

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ এবং আমদানি নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সব বৈদেশিক দেনা পরিশোধের পরিকল্পনা নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বৈদেশিক দেনার পরিমাণ ছিল ৩.২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮২৯ মিলিয়ন (৮২ কোটি ৯০ লাখ) ডলারে। বাকি দেনা এ বছরের মধ্যেই পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।

উপদেষ্টার ভাষ্যমতে, বর্তমানে কোনো বিলম্বিত দেনা বা জরিমানা নেই, কারণ নির্ধারিত সময়েই দেনা পরিশোধ করা হচ্ছে। যথাসময়ে বিল পরিশোধের কারণে এলএনজি আমদানির ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে—প্রতি এমএমবিটিইউ যেখানে আগে ১৬-১৭ ডলার ছিল, এখন তা কমে ১১ ডলারে নেমে এসেছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৮২৯ মিলিয়ন ডলারের মোট বকেয়ার মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের অংশ ৫২৯ মিলিয়ন ডলার এবং জ্বালানি খাতের অংশ ৩০০ মিলিয়ন ডলার। বিদ্যুৎ খাতে ভারতের কাছ থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ এবং কয়লার বিল উল্লেখযোগ্য, আর জ্বালানি খাতের বকেয়ার বেশিরভাগই এলএনজি আমদানির বিল।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকার আনুমানিক ব্যয়ে ৯৬টি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা করেছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ সংখ্যা ১১৫-এ উন্নীত হতে পারে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭ হাজার ৬০৭.৩৫ কোটি টাকা। এতে প্রতিটি এলএনজি কার্গোর গড় ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৫৮৭ কোটি টাকা।

ইএমআরডি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সরকার জ্বালানি ভর্তুকি হিসেবে ৬,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তিনি বলেন, “সামান্য শুল্ক সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন গ্যাস সরবরাহের পথ তৈরি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আরও বেশি এলএনজি আমদানি সম্ভব হবে।”

বিদ্যুৎ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বৈদেশিক দেনা পরিশোধে ৬০ দিনের একটি চক্র বিবেচনায় রাখা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই সব বকেয়া পরিশোধে সক্ষম হবে।

দেশীয় গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ বর্তমানে জিটুজি (সরকারি পর্যায়ে) এবং খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানি করছে। বর্তমানে ইউনিটপ্রতি এলএনজির দাম পড়ছে ৭০ টাকা, যা দেশীয় গ্যাসের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ টাকায়।

এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বৈদেশিক দেনা পরিশোধে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে, যা আগামী জুনে আইএমএফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পূর্বে জমা দিতে হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে।

এলএনজি আমদানি বাড়াতে কাতার সফর

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জিটুজি ভিত্তিতে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার পেছনে রয়েছে স্পট মার্কেটের অস্থির মূল্য পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষাপটে কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামী ২২ থেকে ২৪ এপ্রিল একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল কাতার সফরে যাচ্ছে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সফরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টাও অংশ নেবেন।

বাংলাদেশ ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কাতার এনার্জি এবং ২০১৮ সালের ৬ মে ওমানের ওকিউটি’র সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির চুক্তি করে। কাতারের সঙ্গে ১৫ বছরের এবং ওমানের সঙ্গে ১০ বছরের এই চুক্তির আওতায় প্রতি বছর যথাক্রমে ১.৮ থেকে ২.৫ মিলিয়ন টন এবং ১-১.৫ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানির কথা রয়েছে।

এছাড়া, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি আমদানির কার্যক্রম শুরু হয়। এ পর্যন্ত কাতার এনার্জি থেকে ২৪০ কার্গো, ওকিউটি থেকে ১১৪ কার্গো এবং স্পট মার্কেট থেকে ৬৯ কার্গোসহ মোট ৪২৩ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

বাংলাদেশ থেকে আরও নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘকে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নিউজ ডেস্ক জাতিসংঘকে বাংলাদেশ থেকে আরও নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তিনি...