Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিকটবর্তী এলাকায় ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে, দ্রুজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় সিরীয় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে—এ অভিযোগ তুলে।
শুক্রবার ভোররাতে সংঘটিত এই হামলা চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের দ্বিতীয় আঘাত এবং এটি সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা’কে দেওয়া একটি শক্ত বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামলার পর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “এটি সিরীয় শাসকের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা: আমরা দামেস্কের দক্ষিণে সিরীয় বাহিনীর অবস্থান কিংবা দ্রুজ সম্প্রদায়ের প্রতি যেকোনো হুমকিকে মেনে নেব না।”
এই সপ্তাহে সিরিয়ায় সরকারি অনুগত বাহিনী ও দ্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
সিরিয়ার দ্রুজ আধ্যাত্মিক নেতা শেখ হিকমাত আল-হিজরি এই সহিংসতাকে “গণহত্যামূলক অভিযান” হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং শান্তি বজায় রাখতে ও এই অপরাধ বন্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন “বিশেষ করে দ্রুজদের রক্ষায় তাদের দায়িত্ব পালন করে—যাদের বিরুদ্ধে সিরীয় সরকার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী নির্যাতন চালাচ্ছে।”
ইসরায়েল এর আগেও সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারকে “ইদলিব থেকে আগত এক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যারা বলপ্রয়োগে দামেস্ক দখল করেছে” বলে অভিহিত করেছে এবং চলতি সপ্তাহে দ্রুজদের প্রতি তাদের সমর্থন আরও জোরদার করেছে।
দ্রুজরা ১০ম শতাব্দীতে শিয়া ইসলামের একটি শাখা থেকে উদ্ভূত একটি সম্প্রদায়, যারা মূলত সিরিয়া, লেবানন ও ইসরায়েলে বসবাস করে। ইসরায়েলে এই সম্প্রদায়ের অনেকেই সামরিক বাহিনীতে কাজ করেন এবং দেশটির দীর্ঘদিনের মিত্র।
অন্যদিকে, সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসআদ আল-শাইবানি বৃহস্পতিবার “জাতীয় ঐক্যের” ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “স্থিতিশীলতা ও পুনর্গঠনের যেকোনো প্রক্রিয়ার ভিত্তি জাতীয় ঐক্যই হওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “যেকোনো বাহ্যিক হস্তক্ষেপের আহ্বান, তা যেকোনো অজুহাতেই হোক না কেন, কেবল পরিস্থিতির আরও অবনতি ও বিভাজন সৃষ্টি করবে।”
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রেসিডেন্ট আল-শারা’র নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে অন্যতম গুরুতর চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। আল-শারা ডিসেম্বরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর একটি জোটের নেতৃত্ব দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরান।
তারপর থেকেই সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাড়তে থাকে।
এই সপ্তাহের সংঘর্ষের আগে মার্চ মাসে নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের মিত্রদের হাতে আলাওয়ি সম্প্রদায়ের ১,৭০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
উল্লেখ্য, আলাওয়িরা মূলত পশ্চিম সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল এলাকায় বসবাস করে এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট আল-আসাদও এই সম্প্রদায়েরই সদস্য।