Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্ক:
১৯৬২ সালে হয়েছিল, ১৯৭১ সালেও হয়েছিল, আবার চলতি বছরের ৭ মে ভারতে নিরাপত্তা মহড়া হতে যাচ্ছে। তবে কেন এই নিরাপত্তা মহড়া?
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা যাদের স্মরণে আছে, তারা মনে করতে পারবেন কলকাতায় তখন সাইরেন বাজতো, ব্ল্যাক আউট হয়ে যেত। বাড়ির জানালার কাচে কাগজ লাগিয়ে রাখা হয়েছিল। গাড়ির হেডলাইটের কাচ অর্ধেক কালো করে ঘুরতেন চালকেরা। সেসময় বলা হয়েছিল, সম্ভাব্য আক্রমণ হলে কী করতে হবে এবং কোন কোন জিনিস করা যাবে না।

ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে বহুবার উত্তেজনা প্রবল হয়েছে। তার কয়েকটি উদাহরণ হলো, উরি, পাঠানকোট, সংসদ ভবন আক্রমণ এবং কার্গিল। কিন্তু তখনো এই নিরাপত্তা মহড়ায় অংশ নিতে হয়নি সাধারণ মানুষকে। যা তাদের করতে হবে বুধবার।
কারা মহড়া করাবেন?
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রাম থেকে মহানগর পর্যন্ত দেশের ২৪৪টি সিভিল ডিফেন্স জেলায় এই মহড়া হবে। জেলাশাসক, বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মীরা, হোমগার্ড, সিভিল ডিফেন্স ওয়ার্ডেন, স্বেচ্ছাসেবকরা ছাড়াও থাকবেন এনসিসি, এনএসএস, এনওয়াইকেএসের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়ারা। তাছাড়া হটলাইনে বিমান বাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হবে।
কী বলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো বিমান হামলা হলে কী করতে হবে তা মহড়ায় থাকবে। বিমান হামলার সাইরেন বাজলে কী প্রস্তুতি নিতে হবে তা মহড়ায় থাকবে। কন্ট্রোল রুম ও শ্যাডো কন্ট্রোল রুম কীরকম কাজ করছে তাও দেখা হবে।
বলা হয়েছে, ব্ল্যাক আউট হলে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সেটাও জানানো হবে।গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলির জন্য কী ব্যবস্থা নিতে হবে সেটাও বলা হবে। কোনো হামলা হলে কীভাবে উদ্ধার করতে হবে, কীভাবে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নিতে হবে, সেটাও বলা হবে। দমকল এবং উদ্ধারকারীদের প্রস্তুতির বিষয়টিও দেখা হবে।

এরকম মহড়া ৫৪ বছর পর আবার হচ্ছে। এরকম মহড়া হচ্ছে, পেহেলগাম-কাণ্ডের পর। সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় এবং প্রতি রাতে গুলির লড়াই চলতে থাকায় এই মহড়া। ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানের সেনা প্রতিদিন কোনোরকম উসকানি ছাড়া বিভিন্ন সেক্টরে গুলি চালাচ্ছে। তখন তাদের জবাব দিচ্ছে বিএসএফ। এই আবহে নিরাপত্তা মহড়া হচ্ছে।
অবসরপ্রাপ্ত লেফটোন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ১৯৬২ সালে এটা আসামে হয়েছে। বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় হয়েছে। সে সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৩ দিনের যুদ্ধ হয়েছিল। তখন এই ড্রিলের গুরুত্ব বোঝা গেছিল। এটা হচ্ছে রেডি থাকা। খুব তাড়াতাড়ি সাধারণ মানুষ কী করবেন তা তাদের শিখিয়ে দেয়া হয়। এই মক ড্রিলে সব ধরনের বিষয় থাকে। সেখানে কখন লাইট অফ করতে হবে, জল ভরে রাখতে হবে, আগুন লাগলে কী করতে হবে থেকে শুরু করে কার কী কাজ হবে এ নিয়ে বিস্তারিতভাবে বলা হয়। সেজন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ।
সাবেক আইপিএস অফিসার এবং মরিশাসের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শান্তনু মুখোপাধ্যায় ডিডাব্লিউকে বলেছেন, মানসিক প্রস্তুতির জন্য দরকার হয়। সবাই বুঝতে পারেন, তাদের কতটা সতর্ক থাকতে হবে। এটা একটা প্রস্তুতি ও মানুষকে সচেতন রাখার জন্য করা হয়।