Your Ads Here 100x100 |
---|
খবরের দেশ ডেস্কঃ
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বড় আকারে কাটছাঁট করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার চেয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম। শতাংশের হিসাবে তা ১৩.২০ শতাংশ হ্রাস।
পরিকল্পনা কমিশনের সূত্র অনুযায়ী, নতুন এডিপিতে সরকারি তহবিল থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে আরও ৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা যোগ করলে মোট এডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এডিপির মোট বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ যাচ্ছে পরিবহণ ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধা—এই পাঁচ খাতে। এই খাতগুলোর মধ্যে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাত একাই পাচ্ছে ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৫.৬৪ শতাংশ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকা (১৪.৮%), শিক্ষাখাতে ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি (১২.৪২%), গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধায় ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি ৪০ লাখ (৯.৯০%) এবং স্বাস্থ্য খাতে ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে (৭.৮৯%)।
সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: স্থানীয় সরকার বিভাগ (৩৬,৯৮ কোটি টাকা), সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ (৩২,৩২৯ কোটি), বিদ্যুৎ বিভাগ (২০,২৮৩ কোটি), শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং নৌ ও রেলপথ বিভাগ।
অন্যদিকে সর্বনিম্ন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সংসদবিষয়ক সচিবালয়কে—মাত্র ২০ হাজার টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন এডিপিতে প্রকল্প থাকবে মোট ১,১৪৩টি। এর মধ্যে ৯৬৯টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ৯৭টি কারিগরি সহায়তা, ১৯টি সমীক্ষা এবং ৫৮টি সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, “এডিপির আকার ছোট হলেও বাস্তবায়নের দিক থেকে এটি যথেষ্ট বড়। তবে সমস্যা হলো, অর্থবছরের শুরুতে কার্যক্রম ধীর থাকে এবং শেষ দিকে হঠাৎ খরচ বাড়ে। এই প্রবণতা দূর না হলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না।”
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, এবারের বাজেট বাস্তবমুখী করার লক্ষ্যেই কাটছাঁট করা হয়েছে। উন্নয়ন বাজেট উচ্চাভিলাষী না হয়ে বাস্তবায়নযোগ্য হওয়ার দিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১৯ মে (রোববার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এই খসড়া এডিপি উপস্থাপন করা হবে। এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।