Your Ads Here 100x100 |
---|
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
গাজা পরিস্থিতি শান্ত করতে নতুন এক যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার খসড়া হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৬০ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে এবং প্রথম সপ্তাহেই ইসরায়েলের হাতে থাকা ২৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে—যাদের মধ্যে জীবিত ও মৃত উভয়ই রয়েছেন। বিনিময়ে মুক্তি পাবে ১,২৩৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ও ১৮০ জনের মৃতদেহ।
এই পরিকল্পনার নিশ্চয়তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে যুক্ত রয়েছে মিশর ও কাতার। নথি অনুযায়ী, হামাস চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেই গাজায় আন্তর্জাতিক সহায়তা পাঠানো শুরু হবে। এই সহায়তা সরবরাহ করবে জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা।
ইতোমধ্যে ইসরায়েল এই মার্কিন প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে বলে জানায় হোয়াইট হাউস। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশ, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় বন্দি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস জানায়, তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে এবং শুক্রবার বা শনিবার নিজেদের অবস্থান জানাবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শেষে দ্বিতীয় ধাপে অবশিষ্ট ৫৮ জন ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে শেষ ৩০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস। একইসঙ্গে ইসরায়েল গাজায় সকল ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ করবে এবং পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করবে।
তবে মার্চ মাসে ব্যর্থ হওয়া যুদ্ধবিরতির মতো এবারও রয়েছে বেশ কিছু মতপার্থক্য। ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধের ইতি টানার আগে হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে এবং তাদের শাসন কাঠামো ভেঙে দিতে হবে। হামাস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে, বরং তারা চায়, ইসরায়েল গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের স্থায়ী ইতি ঘোষণা করুক।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলি তথ্য অনুযায়ী, ওই হামলায় নিহত হন প্রায় ১,২০০ জন এবং ২৫১ জন ইসরায়েলি জিম্মি হন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে, এরপর ইসরায়েলি অভিযানে ৫৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। পুরো অঞ্চলটি পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
গাজার মধ্যাঞ্চলে এক সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার বর্ণনা দিয়ে এক বাসিন্দা, আবু ঈদ আবু রোকবা বলেন, “সবকিছু বিশৃঙ্খল, এর দায় কে নেবে?”
ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। অনেক ইউরোপীয় দেশ, যারা এতদিন প্রকাশ্যে সমালোচনা করেনি, এখন যুদ্ধবিরতি ও বৃহৎ সহায়তার দাবি তুলছে।
মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, “আমরা একটি নতুন টার্মশিট পাঠাতে যাচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদি শান্তি সমাধানে পৌঁছাতে আমি আশাবাদী।”
পরিকল্পনা অনুযায়ী, যদি ৬০ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শেষ না হয়, তবে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো যাবে।
তবে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি জানিয়েছেন, প্রস্তাবের শর্তগুলো একতরফাভাবে ইসরায়েলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে এবং হামাসের মূল দাবিগুলোর কোনোটিই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামে এক মার্কিন সমর্থিত ও ইসরায়েল অনুমোদিত বেসরকারি সংস্থা গাজার তৃতীয় স্থানে সাহায্য বিতরণ শুরু করেছে।
জাতিসংঘ বলছে, অবরোধের কারণে ২০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। সহায়তা কার্যক্রম অপর্যাপ্ত এবং সমন্বয়হীন বলেও সংস্থাটি মন্তব্য করেছে।
GHF জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ খাবার বিতরণ করেছে এবং আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও বিতরণ কেন্দ্র চালু করবে।
সূত্রঃরয়টার্স