| Your Ads Here 100x100 |
|---|
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা ৪৮ মিনিট থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তাদের এ বৈঠক চলে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র কালবেলাকে এমনটা জানায়। আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়েছে।
গত শনিবার এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। ঢাকা থেকে এক দিনের সফরে গতকাল কক্সবাজারে গিয়ে রাতে ঢাকায় ফেরেন হাস।
গত বছরের আগস্টে রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্র-জনতার ইচ্ছাতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদের নিয়ে গঠিত হয় নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তির বিশেষ দিন গত ৫ আগস্ট এনসিপির পাঁচ শীর্ষস্থানীয় নেতা হঠাৎ কক্সবাজারে যান। সেখানে হোটেল সি পার্লে তারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা অংশ নেন ওই বৈঠকে। সঙ্গে তাসনিম জারার স্বামী খালেদ সাইফুল্লাহ ও সারজিস আলমের স্ত্রী ছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় দেশজুড়ে। অবশ্য ওয়াশিংটনের একটি সূত্র সে সময় নিশ্চিত করে যে, পিটার হাস বাংলাদেশে নন, বরং ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুনঃ একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের রায় বহাল
বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত থাকাকালে নানা কারণে সব সময়েই আলোচনায় ছিলেন পিটার হাস। গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মাত্র কয়েকদিন আগে তিনি বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালন শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে ২৭ সেপ্টেম্বর দেশটির ফরেন সার্ভিস থেকে অবসর নেন। এর মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ১ অক্টোবর যোগ দেন এক্সিলারেট এনার্জিতে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানির মার্কিন এই বহুজাতিক কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশে। কোম্পানিটি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পরিচালনা করে। তার নিয়োগের পর প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে সে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে কাজ করেছেন পিটার হাস। তার এ অভিজ্ঞতাই কাজে লাগাতে চায় এক্সিলারেট এনার্জি। সেই হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা বাড়াতে যে কোনো সময় বাংলাদেশে আসতে পারেন আলোচিত সাবেক এই কূটনীতিক। তাই ফরেন সার্ভিস থেকে অবসরে গেলেও বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার সুযোগ হারাননি তিনি।
গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জনে ফের আলোচনায় আসেন পিটার হাস। যদিও তখন তিনি অবস্থান করছিলেন ওয়াশিংটনে। ২০২২-২০২৪ সময়কালে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পিটার হাসের তৎপরতা ছিল দৃশ্যমান, যার জন্য বরাবরই ছিলেন আলোচনায়। গত এপ্রিলের ঢাকা সফরে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্সের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বিষয়ক বৈঠকে অংশ নেন পিটার হাস। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক, জ্বালানি নিরাপত্তা, বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। সর্বশেষ সফরটিতে পিটার হাস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন, সে সময় আলোচনা করেন নানা বিষয়ে। এপ্রিলের পর গত শনিবার আবার ঢাকায় এসেছেন তিনি।

