| Your Ads Here 100x100 |
|---|
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় বিতর্কিত ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল্লার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মিলমালিক সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন লাল বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মুহাম্মদ শহীদুল্লার নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এর আগে ওই মিলমালিক কুড়িগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আরও একটি মামলা করেন; যা তদন্তাধীন রয়েছে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তার অনিয়ম, দুর্নীতি অর্থ আত্মসাৎ পচা ও নিম্নমানের চাল বিতরণের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রৌমারী খাদ্যগুদামে হানা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষ্যগ্রহণসহ গুদামে পচা নিম্নমানের চাল আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই চলছে।
জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রৌমারী এলএসডিতে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন মিডিয়ার একাধিক সংবাদ প্রচার হলেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
সোহেল চালকলের মালিক সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী চলতি মৌসুমে তার মিলের অনুকূলে ৫২ টন চাল বরাদ্দ পায়। ওই মিলমালিক ৪২ টন চাল গুদামে জমা দিয়ে নিজ নামে বিল তুলে নেয়।
বাকি ১০ টন চাল গুদামে জমা দিলে ওই চালের বিল সোহেল চালকলকে না দিয়ে ইনভয়েজ পাল্টিয়ে ভুয়া মিল মালিক শামীম এন্টারপ্রাইজ নামে বিল তুলে আত্মসাৎ করেন।
ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রকৃত কৃষককে বঞ্চিত করে তিনি কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগসাজশ করে গুদামে ধান ক্রয় দেখিয়েছেন। চলতি মৌসুমে ৬৫৭ টন ধান সংগ্রহের জন্য বরাদ্দ হলেও তিনি লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন না করেই সরাসরি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধান ক্রয় করেছেন।
উপজেলার নতুন বন্দর গ্রামের কৃষক নুরনবী, মধু ও রাজু জানান, এই খাদ্য কর্মকর্তা আমাদের মতো কৃষকের কাছ থেকে ধান না কিনে সরাসরি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধান ক্রয় করেছেন যা সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তার বস্তা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেখা যায়, গুদাম থেকে নতুন বস্তা খোলা বাজারে বিক্রি করে ৬০ টাকা দরে। আবার চাল ও ধান গুদামে দেওয়ার সময় দেখা যায়, পুরাতন ছেঁড়া, ফাটা বস্তায় করে দেওয়া হয়।
মোস্তফা মোর্শেদ ও ইব্রহিম নামে দুই ডিলার বলেন, গুদাম থেকে চাল নিতে গেলে শুধু পুরাতন বস্তায় চাল দেয়।
তারা বলেন, একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে নতুন বস্তা পাল্টে অর্ধেক দামের পুরাতন বস্তা দিয়ে চালাচ্ছে তাদের কার্যক্রম। বস্তা বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
পচা নিম্নমানের চাল বিতরণের ঘটনায় দেখা যায়, তদন্ত কমিটি এ পর্যন্ত ২০০ টন পচা নিম্নমানের চালের হদিস পায়। এর মধ্যে গ্রাহকের কাছে ১৫০ টন বিতরণ হয়েছে। বাকি ৪০ টন চাল গুদামের ভিতর আলাদা করে রাখা হয়েছে। ১০ টন চাল গুদামের বাইরে পরে আছে।
ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমাকে একটি মহল ফাঁসানোর টেষ্টা করছে।
কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. হামিদুল হক বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

