বিশ্ব পর্যটন দিবসে দেশের সড়ক নিরাপত্তায় নতুন মাইলফলক স্পর্শ করল অনলাইন বাস টার্মিনাল (ওবিটি)। কক্সবাজার জেলা পুলিশের উদ্ভাবিত এ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম এক বছর পূর্ণ করল আজ।
ওবিটি চালুর মাধ্যমে আন্তঃজেলা পরিবহনে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্ল্যাটফর্মে পরিবহন কোম্পানি, বাস শিডিউল, ফিটনেস ও রুট পারমিট, চালক-গাইডের ডেটাবেস, দুর্ঘটনার তথ্য এবং যাত্রী রিভিউ-রেটিং যুক্ত হওয়ায় যাত্রীসেবা সহজতর হয়েছে।
গত এক বছরে কক্সবাজারে চলাচলরত ৭৩টি আন্তঃজেলা পরিবহনের শিডিউল একীভূত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১০৫টি পরিবহনের ১৭৬৮টি বাস, ১,৬৮০ জন চালক ও ২,৩৮৬ জন গাইডের তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পর্যটক ও গ্রুপ ভ্রমণকারীদের জন্য প্রায় ১১ হাজার অনলাইন পারমিশন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন খবরের দেশকে বলেন – অনলাইন শিডিউল ও জেলা ড্যাশবোর্ড ব্যবহারে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়েছে, কমেছে যানজট। চালক-গাইডের তথ্য ও বাস ছাড়ার লোকেশন গুগল ম্যাপে যুক্ত হওয়ায় স্বচ্ছতা বেড়েছে। অভিযোগ ও রেটিং ব্যবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ চালক শনাক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি চালু হয়েছে “ইমার্জেন্সি এলার্ম সিস্টেম”, যার মাধ্যমে যাত্রীরা সরাসরি নিরাপত্তা সহায়তা চাইতে পারছেন। পর্যটন নগরীর সুগন্ধা পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এলইডি ডিসপ্লেতেও এখন বাস শিডিউল দেখা যাচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ভবিষ্যতে কক্সবাজারের বাইরে দেশের সব জেলায় ওবিটি বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি আন্তঃজেলা টার্মিনালকে একই প্ল্যাটফর্মে এনে সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বাসের ফিটনেস, রুট পারমিট ও চালকের তথ্য রিয়েল-টাইমে যাচাই করতে পারবে। যা সড়কে শৃঙ্খলা উন্নত করার জন্য ওবিটি হবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগ ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওবিটি মডেল বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এই উদ্যোগ সড়কে শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়কে মৃত্যুহার অর্ধেকে নামিয়ে আনার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়ক হবে।