এম এ রাজ্জাক (সুমন)
মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।
বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, স্মার্টফোনে অনলাইন জুয়ার ভয়ানক নেশায় আকণ্ঠ ডুবে যাচ্ছে। ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা এই আসক্তিকে শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। রাতারাতি ধনী হওয়ার মিথ্যা আশায় তারা নিজেদের সঞ্চয় তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের টাকাও বাজি ধরছে। এই জুয়া এখন আর নিছক বিনোদন নয়, বরং মহামারীর রূপ ধারণ করেছে। এর পেছনে রয়েছে জটিল আন্তর্জাতিক চক্র, যারা মোবাইল ব্যাংকিং এবং অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে। সহজলভ্য অ্যাপস এবং লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তারা টার্গেট করছে তরুণ মনকে।ফলস্বরূপ, ছাত্রজীবনে নেমে আসছে অন্ধকার।
পড়ালেখায় অমনোযোগ, আর্থিক সংকট এবং মানসিক অস্থিরতা গ্রাস করছে তাদের। জুয়ার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে অনেকে। পারিবারিক অশান্তি বাড়ছে, কলহ লেগেই থাকছে। জাতীয় প্রতিকার হিসেবে অবিলম্বে প্রয়োজন কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন। জুয়ার ওয়েবসাইট ও অ্যাপসগুলো দ্রুত বন্ধ করতে হবে এবং ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে জুয়ার টাকা আদান-প্রদানকারী চক্রকে চিহ্নিত করে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। পাশাপাশি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে। অভিভাবকদেরও সন্তানদের স্মার্টফোন ব্যবহারে লাগাম টানতে হবে এবং তাদের প্রতি আরও মনোযোগী হতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব শুধু আইন প্রণয়ন নয়, বরং সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করে আসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা। এই মুহূর্তেই সম্মিলিত পদক্ষেপ না নিলে, জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এক ঘোর সংকটের মুখে পড়বে।