17 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫

তালেবান শাসনে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও সীমাবদ্ধতা

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
খবরের দেশ ডেস্ক :
তালেবান ২০২১ সালের  পর থেকে ধাপে ধাপে এমন নীতি ও নির্বাহী আদেশ আরোপ করেছে যা আফগান সমাজের বহু দিক—বিশেষ করে নারী ও কিশোরী শিক্ষাদান, কর্মজীবন, গণমাধ্যম, সাংস্কৃতিক জীবন ও ডিজিটাল যোগাযোগ—কে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মেয়েদের ব্যাপকভাবে বাইরে রাখা, বারবার ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা নিপাৎ/ব্লাকআউট, স্বাধীন গণমাধ্যমের অস্তিত্ব সংকুচিত হওয়া ও সাংস্কৃতিক/সংগীত-উপকরণ ধ্বংস—এসবই সাম্প্রতিক ও সবচেয়ে গুরুতর চিহ্নগুলো।
তালেবান নেতৃত্ব বিভিন্ন সময়ে শতাধিক (অনেকে ৭০-এর বেশি হিসেবে গণনা করেছেন) ডিক্রি, নির্দেশনা এবং আঞ্চলিক-প্রবর্তিত ‘নীতি’ জারি করেছে যেগুলো ধাপে ধাপে নারী–কিশোরীর सार्वजनिक জীবনের সীমাবদ্ধতা বাড়িয়েছে—পরিধান, চলাচল, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে। এইসব আদেশ প্রাথমিকভাবে ইসলামিক নৈতিকতার
রূপরেখা বলে উপস্থাপন করা হয়,
আফগান অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষকরা  বলছেন –
বাস্তবে এগুলো কার্যত লিঙ্গভিত্তিক নিষেধাজ্ঞায় পরিণত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-
 অনুসরণযোগ্য নীতি ও জেলা/প্রাদেশিক আদেশের মাধ্যমে মাধ্যমিক (ষষ্ঠ শ্রেণীর পর) ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মেয়েদের অনেক জায়গায় পাঠচলাচল বন্ধ করা হয়েছে—ফলশ্রুতিতে কোটি কোটি শিশু-মেয়েদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। UNESCO এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাব অনুযায়ী কয়েক মিলিয়ন (প্রায় ২.২ মিলিয়ন) আফগান কিশোরী এখনো স্কুলের বাইরে রয়েছেন।
শিক্ষাগত পাঠ্য ও সুযোগ সংকোচন: শিক্ষার বিষয়বস্তুতে ধর্মীয়/শারীয়াহ-মুখী বিষয়ের প্রবল অগ্রাধিকার, নারীবিশেষ বিষয়বস্তুর সবাইকরণে বাধা ইত্যাদি চিহ্নিত হয়েছে। ফলত দীর্ঘমেয়াদি মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক প্রোফাইল দুর্বল হবে বলে বিশ্লেষকরা উদ্বিগ্ন।
ফলে যে প্রভাবগুলো পড়বে সেগুলো হলো- শিক্ষাবঞ্চিত এক পুরো প্রজন্মের সম্ভাব্য বিপর্যয়—ব্যক্তিগত স্বাবলম্ব্য, জাতীয় কর্মশক্তি ও স্বাস্থ্যখাতে নেতিবাচকতা।
সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে নিষেধ/সীমাবদ্ধতা: স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রশাসনসহ অনেকে ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগে কঠোরতা বা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে; ফলে নারী রোগীদের জন্য নারী স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব বাড়ছে এবং সার্বিক সেবা কমছে।
এনজিও ও সাহায্য কর্মে প্রভাব: বহু আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় সংস্থার কর্মসূচি নারী-লক্ষ্যকরণ কণ্ডিশনাল—তাই নারীর অংশগ্রহণে বাধা থাকলে মানবিক সহায়তার গুণগত ও বিস্তৃত কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চতালেবান প্রশাসনের বিভিন্ন ঘোষণা ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় মেয়েদের জন্য ‘মাহরামের সঙ্গে চলাচল’ বা কড়া হিজাব/বোরকা বিধি জারি ও চাপানো হয়েছে। এর ফলে দৈনন্দিন জীবন যেমন স্বাভাবিক চলাচল থমকে গেছে, তেমনি নারীদের জন্য জরুরি চিকিৎসা বা সরকারি সেবা প্রাপ্তি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মধ্যবর্তী ও সিস্টেম্যাটিক চাপ: তালেবান ক্ষমতা গ্রহন করে থেকে স্বাধীন মিডিয়া ধীরগতিতে ধ্বংসের মুখে পড়েছে—জুরিমানা, সাংবাদিক গ্রেপ্তার, সংবাদ-কনটেন্টে সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং আত্ম-সেন্সরশিপের বিস্তার ঘটেছে। Reporters Without Borders ও Human Rights Watch–সহ অনেক প্রতিবেদন এ বিষয়ে সতর্ক করে।
পরিণতি: সমালোচনামূলক সাংবাদিকতা প্রায় বিলুপ্ত; সাহসী রিপোর্টারদের বিতাড়িত বা নির্বাসিত হতে হচ্ছে; স্থানীয় গণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধানে তথ্যপ্রবাহ অনিশ্চিত।
তালেবান যুগোপযোগী সাংগীতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ বা অতীব সীমিত করে রেখেছে; সংস্কৃতিকর্মে সরাসরি হস্তক্ষেপের ফলে বহু শিল্পী দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৪–২০২৫ সালজুড়ে রিপোর্ট মিলেছে—সংগীতীয় উপকরণ ধ্বংস এবং সংগীতের প্রতি বাধা; কিছু রিপোর্টে উল্লেখ আছে যে এক বছরে বিপুল সংখ্যক (উদাহরণস্বরূপ হাজারের উপরে) সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।
উদাহরণ: ২০২৪–২৫ সময়কালে তালেবানের ‘নৈতিকতা’ বিভাগ দ্বারা অনেক বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে এসেছে—যার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক জীবন প্রকম্পিত হয়েছে।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ড: ঘটনার ৬০ ঘণ্টা পর গৃহকর্মী আয়েশা ও তার স্বামী গ্রেপ্তার

ঢাকার মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল (১৫) হত্যাকাণ্ডের প্রায় আড়াই দিন পর গৃহকর্মী...