18 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫
জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

নরসিংদী গণপূর্ত বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পে অনিয়ম ও টেন্ডার জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, বিভাগটির নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম মুসা, যিনি ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে দায়িত্বে আছেন, তার সময়ে কয়েকটি বড় প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিশেষ করে ঢাকা–সিলেট ছয় লেন উন্নয়ন প্রকল্পের সার্ভে ও ভ্যালুয়েশন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও দোকান মালিকদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কিছু ঠিকাদার ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, ডিভিশনের কিছু এলটিএম টেন্ডারে অংশগ্রহণ সীমিত রাখা হয়েছে এবং মাত্র কয়েকটি সিডিউল বিক্রয়ের তথ্য দেখিয়ে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ সময়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে লে-আউট তৈরীসহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানা দোকান মার্কেট বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনারর ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে সার্ভে বা ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট তৈরীর নামে অধীনস্থ উপসহকারী প্রকৌশলী ইকরামুল হাসান ও আনোয়ারুল হকের মাধ্যমে প্রায় ২ শত কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। এ নিয়ে ইকরামুল হাসানের বিষয়ে ইতোমধ্যে পত্র-পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে তাকে প্রথমে ভোলা পরে পিরোজপুরে বদলী করা হয়। কিন্ত্র ভ্যালুয়েশন বাণিজ্যের নাটেরগুরু নির্বাহী প্রকৌশলী মুসা রয়ে গেছেন ধরাছোয়ার বাইরে।

বরোঞ্চ তিনি অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করে ঢাকা মহানগরীর কোন গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে পোষ্টিং বাগিয়ে নেয়ার জন্য জোড় তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন। আরো জানা যায়, প্রকৌশলী মুসা ডিভিশনটিতে পাতানো বা সাজানো এলটিএমের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন মোটা অংকের পার্সেন্টেজের বিনিময়ে। এজন্য অসংখ্য এলটিএম টেন্ডার আইডিতে মাত্র ৩টি করে সিডিউল বিক্রয় রেসপন্স ও মূল্যায়ন দেখিয়েছেন। দৃষ্টান্ত স্বরূপ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১১২৫৬০৬, ১১২২৫৩৮, ১১২৫২১১, ১১২২৩০০, ১০৫০৪১৪, ১১১৭৯২৩ ও ১১২২৩১৭ নং এলটিএম আইডিগুলোতে মাত্র ৩টি করে সিডিউল বিক্রয় রেসপন্স ও মূল্যায়ন দেখানো হয়েছে। অথচ সুষ্ঠুভাবে টেন্ডার লাইভে থাকলে একেকটি আইডিতে কমপক্ষে ৩০/৩৫টি সিডিউল বিক্রি হয় ডিভিশনটিতে। একইভাবে একইঅর্থবছরের ১০৭০০৬৫. ১০৬২৩৩৯, ১১২৫৫৯৩, ১১২৫৬০৭, ১১২৬০১৬ ও ১০৮১৩৬৮ নং এলটিএম টেন্ডার আইডিগুলোতে মাত্র ২টি করে সিডিউল বিক্রয় রেসপন্স ও মূল্যায়ন দেখানো হয়েছে। আবার একই অর্থবছরে ১০৬২৩৫৯, ১০৬৮১২৮, ১০৯৩৮৬৬, ১১১৭৯২৩, ১০৭৪৮৭৭, ১০৮১০৫২ ও ১১২১৪১৪ নং এলটিএম টেন্ডার আইডিগুলোতে মাত্র ১টি করে সিডিউল বিক্রয় রেসপন্স ও মূল্যায়ন দেখিয়ে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে প্রকৌশলী মুসা জুলাই আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্থ নরসিংদী জেলা কারাগার জজ কোর্ট ও আন্যান্য স্থাপনার জরুরী মেরামত ও পূণঃনির্মাণের নামে পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে আগে কাজ করিয়ে পরে ওটিএমের মাধ্যমে কাজ পাইয়ে দিয়ে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছেন বরাদ্দের একটি বড় অংশ। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয়লেন প্রকল্পের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের প্রধান গেট বাউন্ডারীওয়াল ও অভ্যন্তরীণ আরসিসি রাস্তা নির্মাণের নামে নির্বাহী প্রকৌশলী অধীনস্থ প্রকৌশলীদের মাধ্যমে নিজেই ঠিকাদারী করে কয়েক লক্ষ টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রযেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নরসিংদীর কতিপয় স্থানীয় ঠিকাদার জানান, প্রকৌশলী মুসা একজন চরম ঘুষখোড় পল্টিবাজ কর্মকর্তা। তার চাহিদা মতো পিসি না দিলে ডিভিশনটিতে কেউ কাজ পায় না। তার মতো দুর্নীতিবাজ লুটেরা প্রকৌশলী এই ডিভিশনে অতীতে কখনো আসেনি। আ’লীগের শেষ সময়ে এই প্রকৌশলী ভোলা ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি আর লুটপাটের দায়ে অভিযুক্ত হন। ঢাকা থেকে ঠিকাদার ডেকে নিয়ে সেখানে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এলটিএম ওটিএম উভয় পদ্ধতিতেই কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন। ইনভেন্ট পয়েন্ট কম্পিউটার ও মেসার্স রাতুল এন্টপারপ্রাইজ নামক ঢাকার দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেই বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসা করার কারণে সে সময়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের হাতে তাকে লাঞ্ছিত হতে হয়েছিলো। সে সময়ে ইনভেন্ট পয়েন্ট কম্পিউটার ভোলা ডিভিশনে লিষ্টেড না হলেও প্রকৌশলী মুসা নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানটিকে এলটিএম পদ্ধতিতে বেশ কয়েকটি কাজ পাইয়ে দেন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে। ডিভিশনটির এই লাগাতার অনিয়ম দুর্নীতির সাথে আরো জড়িত আছেন উপসহকারী প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক ও মোঃ রফিকুল ইসলাম। উপসহকারী প্রকৌশলী আনোয়ারুল হক প্রায় অর্ধযুগ যাবৎ নিজ জেলার প্রভাব খাটিয়ে বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসাসহ বিবিধ অনিয়ম জাল-জালিয়াতিতে জড়িয়ে স্থানীয় ঠিকাদার মহলে ইতোমধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন। এই দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে পার্সেন্টেজ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী মুসার সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। লেন প্রকল্পের ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট তৈরীর নামে ৩ শাতাধিক কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করেছেন।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

শীতের তীব্রতায় কাঁপছে কুড়িগ্রাম, দুর্ভোগে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:- দিন যতই গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া...