- Advertisement -
| Your Ads Here 100x100 |
|---|
খবরের দেশ ডেস্ক
বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করেছে। এই সনদকে দলগুলোর নেতারা “ঐতিহাসিক অর্জন” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শুক্রবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাক্ষর কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
রাজনৈতিক সমঝোতার এই দলিলে স্বাক্ষর করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন ও নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধিরা।
এছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরাও সনদে স্বাক্ষর করেন।
তবে এই আয়োজনে অংশ নেয়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাম ঘরানার চার রাজনৈতিক দল—বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।
এনসিপির তিন দফা দাবি
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এনসিপির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন বলেন,
“আমরা শেষ পর্যন্ত ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই। কিন্তু আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়া ছাড়া বিকল্প থাকবে না।”
এর আগে এনসিপি জানিয়েছিল, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া প্রকাশ এবং সনদের বৈধতার উৎস হিসেবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি—এই তিন দফা দাবি পূরণ না হলে তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না।
‘আলোচনাই সমাধান’—বিএনপি মহাসচিব
অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,
“এখানে কোনো দল বাদ পড়ুক, সেটি কাম্য নয়। আমরা বিশ্বাস করি আলোচনার মাধ্যমেই সব মতপার্থক্যের সমাধান সম্ভব।”
তিনি সনদটিকে “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” বলে উল্লেখ করেন।
প্রেক্ষাপট
জুলাই জাতীয় সনদকে আগামী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থার রূপরেখা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এনসিপি ও বাম দলগুলোর অনুপস্থিতি এই সনদের সর্বজনীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহলে।
জামায়াতের শর্তসাপেক্ষ আস্থা
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও এর আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
দলটির নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন,
“প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রেখেই আমরা জুলাই সনদে সই করেছি। কিন্তু সনদ বাস্তবায়নে কোনো বিলম্ব জাতির সঙ্গে গাদ্দারি হবে।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন,
“আমরা আশা করি উনিও (প্রধান উপদেষ্টা) তার কথা রাখবেন এবং বাংলাদেশে নতুন কোনো সংকট বা রাজনৈতিক আধিপত্য যেন সৃষ্টি না হয়।”
সংঘর্ষে উত্তেজনা
এদিকে, সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শুক্রবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে “জুলাই যোদ্ধা” পরিচয়ে বিক্ষুব্ধদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরে আহত হন অন্তত কয়েকজন।
‘নতুন বাংলাদেশের সূচনা’
সনদে স্বাক্ষরের পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,
“এই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম।”

