27 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৫

গণপূর্তে দুদকের অভিযান ; ধরা পড়বেতো চুয়েট ছাত্রলীগার ধূর্ত দুর্নীতিবাজ কায়কোবাদ ?

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
অনুসন্ধানী প্রতিবেদক:
বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ এনফোর্সমেন্ট টিম গণপূর্ত অধিদপ্তরে (Public Works Department) অভিযান শুরু করে। প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও অনুমান ফাঁসের অভিযোগ পাওয়ার পর এই অভিযান চালানো হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ জানান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই দুদকের বিশেষ দল অভিযান পরিচালনা করছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন দুদকের এই তৎপরতার পেছনে গুরুত্বপুর্ণ কিছু কারন রয়েছে। একটি সূত্র জানায় এই অভিযান ঘিরে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত চুয়েট ছাত্রলীগের পোস্টেড প্রাক্তন নেতা বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের নাম। তার বিরুদ্ধে আছে নানান দুর্নীতি, অবৈধ নিয়োগ, সাংবাদিকদের হুমকী প্রদান , টেন্ডার পার্সেন্টেজ নেয়া সহ , বেনামী লাইসেন্সে কাজ ভাগিয়ে নেয়ার মত গুরতর অনিয়মের অভিযোগ। বিভাগটির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, অতীতে এই ধূর্ত শ্রেণীর কর্মকর্তা কায়কোবাদ নানা অসাধু সিন্ডিকেট এবং দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি বর্তমানে পদোন্নতির জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

 

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত চুয়েট ছাত্রলীগের পোস্টেড প্রাক্তন নেতা বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ
গনপূর্ত অধিদপ্তরের ই-এম সার্কেল -২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: কায়কোবাদের অধীনে রয়েছে ইএম বিভাগ ৪, ৫,৭ প্রতিটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর দুর্নীতি ও অনিয়মের আলাদা খতিয়ান। অথচ এ সমস্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির দায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এড়াতে পারে না। মো: কায়কোবাদের বাবার নাম ইউনুস আলী সরকার। জাতীয় পরিচয় পত্র নং-১৯৬৭২৬৯৯০৪০৭২১৬০১ তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী, গনপূর্ত ই-এম সার্কেল-২। তার অধীনে ৩ জন নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন। ই-এম বিভাগ-৪, মো: মহিবুল ইসলাম, ই-এম বিভাগ-৬ পবিত্র কুমার দাস। প্রত্যেক নির্বাহী প্রকৌশলীর আলাদা আলাদা দপ্তর। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে আলাদা আলাদা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া এই কায়কোবাদ বেশ পাল্টে রাজনৈতিকভাবে বেশ প্রভাবশালী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন । সেই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে কায়কোবাদ এবার নতুন এক “মিশন” বাস্তবায়নে নেমেছেন। এতে তাকে সহায়তা করছেন নাম সর্বস্ব তথাকথিত একদল সাংবাদিক নামধারী দুর্বৃত্ত । কয়েকজন ব্যবসায়ী ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি। এই সিন্ডিকেটের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানী সূত্র জানায়, কায়কোবাদের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট টেন্ডার বণ্টন, প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ প্রবাহ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে। কায়কোবাদের গড়ে তোলা সিন্ডিকেটের এজেন্টরা ঠিকাদারদের কাছ থেকে ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন নিয়ে থাকে প্রতিটি প্রকল্পে। সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, কায়কোবাদের এই দুর্ধর্ষ সিন্ডিকেটে যুক্ত রয়েছেন প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার, নির্বাহী প্রকৌশলী, ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলীরা। ফলে এই সিন্ডিকেট দ্বারা সম্পাদিত গণপূর্তের প্রকল্পের মান ও স্বচ্ছতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গণপূর্তের অনেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে খবরের দেশকে জানিয়েছেন, তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ নিজের দুর্নীতি আড়াল করতে মিডিয়ার একটি অংশকে প্রভাবিত করেছেন। তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন মিডিয়ার দালাল হিসেবে কাজ করছেন। একজন কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন “টোকাই শ্রেণীর ওইসব অযোগ্য, দালাল সাংবাদিকদের দিয়ে মূলত কায়কোবাদ তার দুর্নীতির সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। শত শত কোটি টাকার সম্পদ রক্ষার জন্যে কায়কোবাদ কিছু দালাল গোছের অশিক্ষিত লোকদের দিয়ে, প্রপাগান্ডাকারী অপেশাদার নিউজ পোর্টাল বানিয়েছেন, বলা যায় এগুলো সব কায়কোবাদের নিজের অর্থায়নে তৈরী । এ সব পোর্টাল দিয়ে তিনি তার অপছন্দের লোকেদের হয়রানী করেন ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন স্টাফ অফিসার খবরের দেশ প্রতিবেদককে জানান, “কায়কোবাদের কাজই হচ্ছে ভুয়া প্রাক্কলন দেখানো! ফীল্ডে কাজ হয়নাই, কিন্তু কাগজে দেখাবে কাজ হয়ে গেছে, এই কাজে ভারী উস্তাদ কায়কোবাদ স্যার”! এই ভাবে কায়কোবাদ গং সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন শত কোটি টাকার সম্পদ, তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও ধামরাইয়ে ফাউন্ডেশনের নামে ১০ তলা ভবনের করেছেন—যা তার নামে বা পরিবারের নামে নিবন্ধিত। বেনামে করেছেন ঢাকা ১০ টারও বেশি ফ্ল্যাট , প্লট কিনেছেন ঢাকা শহরের গুরত্বপূর্ন জায়গায়। জমি কিনেছেন দেশের নানান প্রান্তে । দুদক, মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার নজর থাকা সত্ত্বেও তিনি ১০ কোটি টাকার বিনিয়োগে পদোন্নতির চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারও তাকে সহায়তা করছেন বলে সূত্র জানায়, যদিও সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানের কারণে পদোন্নতি এখনো আটকে আছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কায়কোবাদের নেতৃত্বে প্রকল্প তদারকিতে অনিয়ম চলছে। ইএম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীরা অনেক সময় কাজ না করেও বিল পান। ফলে, পুরো গণপূর্ত অধিদপ্তরের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা (২১ অক্টোবর, ২০২৫) গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালিত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুদকের এই অভিযানকে সময়োপযোগী হয়েছে বলে স্বাগত জানায়। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে এই অভিযানে কায়কোবাদের মতো কর্মকর্তাদের ইনভেস্টিগেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সামনের সারিতে থাকবে কায়কোবাদ! দুদকের চলমান অভিযান আরো দীর্ঘায়িত এবং কার্যকর হবে বলে সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ জানান। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের অবশ্যই সম্পদের হিসাব দিতে হবে এবং শাস্তির আওতায় আসতে হবে ।
এই বিষয়ে একাধিকবার খবরের দেশের পক্ষ থেকে প্রকৌশলী কায়কোবাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ খবরের দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকের ফোন ধরেননি , মুঠোফোনে পাঠানো ক্ষুদ্র বার্তার প্রতিউত্তরও করেননি ।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

তৃতীয় সন্তানের বাবা হলেন রুমি

খবরের দেশ ডেস্ক : জনপ্রিয় গায়ক, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আরফিন রুমি তৃতীয়বারের মতো পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন। নবজাতকের নাম রাখা...