রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী আইরিন আক্তার বলেছেন, “এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যা। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের অবহেলাই আমার স্বামীকে কেড়ে নিয়েছে। টাকা বা চাকরি দিয়ে এই ক্ষতি পূরণ হবে না। অবহেলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি চাই।”
আজ (রোববার) তেজগাঁও থানায় দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি আইরিন। তিনি বলেন, “আমার ছেলেটার বয়স ৪ বছর, মেয়ের ৩। বাচ্চা দুটি এখন বাবাহীন। কে তাদের এই শোক পূরণ করবে?”
তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইখতিয়ার হোসেন জানান, নিহত আবুল কালাম আজাদ (৩৫) শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি এলাকার জলিল চকদারের ছেলে। তিনি উত্তরায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদের বাসা নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া এলাকায়। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন তিনি। একসময় মালয়েশিয়ায় ছিলেন, তবে ছয় বছর আগে দেশে ফিরে আর বিদেশে যাননি।
আবুল কালামের শ্যালক সোহাগ আহমেদ বলেন, “দুলাভাই আজ কী কারণে ফার্মগেটে গিয়েছিলেন, তা আমরা জানি না। তবে এমনভাবে মারা যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না।”
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেটের ৪৩২ ও ৪৩৩ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি স্থানে বিয়ারিং প্যাড পড়ে ঘটনাস্থলেই আবুল কালাম মারা যান। এ সময় আহত হন আরও দুজন পথচারী। দুর্ঘটনার পর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানায়, নিহতের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা ও একজনকে প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে নিহতের পরিবারের দাবি— “এই টাকা নয়, আমরা চাই যেন এমন অবহেলার কারণে আর কোনো পরিবার এমনভাবে প্রিয়জনকে না হারায়।”