18 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫

বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলেকে হত্যা, জানা গেল ঘটনার কারণ

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100

রাজশাহীতে বিচারকের ভাড়া বাসায় ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাকাণ্ড পুরো শহরকে শোক ও আতঙ্কে নিমজ্জিত করেছে। দিনের আলোয়, স্বাভাবিক সকালবেলার সময়, ১৮ বছরের কিশোর তাওশিফ রহমান সুমনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময় বাঁচার আকুতি নিয়েও গুরুতর আহত হন তার মা তাসমিন নাহার লুসি—বর্তমানে যিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ডাবতলা এলাকার স্পার্ক ভিউ ভবনের পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটটি যেন কয়েক মুহূর্তে রূপ নেয় রক্তাক্ত অপরাধস্থলে। বিচারক আব্দুর রহমানের পরিবার সেখানে কয়েক মাস ধরেই ভাড়া থাকতেন; নিরাপদ মনে করা সেই বাসাই হয়ে ওঠে তাদের জন্য কালো অধ্যায়ের শুরু।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই যে ব্যক্তিকে আটক করে, তিনি আর কেউ নন—মো. লিমন মিয়া (৩৫), যাকে বিচারকের স্ত্রী মাত্র ৭ দিন আগে মোবাইলে হত্যার হুমকির অভিযোগে জিডি করেছিলেন।
দুজনের পরিচয় সৃষ্টি হয়েছিল কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমে অংশ নিতে গিয়েই। ধীরে ধীরে সম্পর্ক ঘনীভূত হয়, আর্থিক টানাপোড়েন যুক্ত হয়, এবং—জিডির ভাষায়—লিমনের আচরণ হয়ে ওঠে আক্রমণাত্মক।
কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তাসমিন নাহারের শরীরের ক্ষতচিহ্নই বলে দেয়, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি তার সন্তানকে বাঁচাতে লড়েছিলেন।
তবে অপরাধীর দৃঢ় আগ্রাসনের সামনে সুমনের জীবন রক্ষা সম্ভব হয়নি।
সুমন ছিলেন রাজশাহী গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র—বন্ধুদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন শান্ত, বিজ্ঞানপ্রেমী আর কিছুটা লাজুক বলেই।
আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান—

“পূর্বপরিচিতি ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা। তবে তদন্তে সব বিষয়ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

তবে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু সম্পর্কের টানাপোড়েন নয়—
  • লিমনের অর্থনৈতিক অস্থিরতা
  • তার মানসিক চাপ
  • ধারাবাহিক হুমকি
    —এসব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ পেয়েছিল।
হামলার সময় লিমন নিজেও আহত হন। পুলিশের ধারণা, হামলার পর পালানোর চেষ্টা করলেও নিজের জখম ও প্রতিবেশীদের সতর্কতায় তিনি ব্যর্থ হন। ফলে ঘটনাস্থলে আটকের দৃশ্যটি আরও নাটকীয় হয়ে ওঠে।
তদন্তকারীরা এখন খুঁজছেন—
  • হামলাটি কি এককভাবে পরিকল্পিত?
  • অন্য কেউ কি তাকে প্ররোচিত করেছে?
  • পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যার উদ্দেশ্য কি কেবল প্রতিশোধ?
  • নাকি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য ছিল?
তাওশিফ রহমান সুমনের মৃত্যু ও তার মায়ের গুরুতর আহত হওয়া শুধু একটি পরিবারকেই নয়—পুরো বিচার বিভাগকেই নড়েচড়ে বসিয়েছে।
নিরাপত্তার প্রশ্ন, বিচারকদের পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনা—সবই এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ড: ঘটনার ৬০ ঘণ্টা পর গৃহকর্মী আয়েশা ও তার স্বামী গ্রেপ্তার

ঢাকার মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল (১৫) হত্যাকাণ্ডের প্রায় আড়াই দিন পর গৃহকর্মী...