পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে সদ্য পাস হওয়া ২৭তম সংবিধান সংশোধনী। সংশোধনীর মাধ্যমে সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আজীবন দায়িত্ব পালন ও গ্রেপ্তার–বিচার থেকে ছাড় দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর তত্ত্বাবধানের অতিরিক্ত ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে, যা দেশটির সামরিক কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের বক্তব্য, এই সংশোধনী সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড কাঠামোকে আরও সুসংহত করবে এবং বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাবে। তাদের দাবি, এতে আদালতগামী মামলার জট হ্রাস পাবে এবং নির্বাহী সিদ্ধান্ত গ্রহণে গতি আসবে।
কিন্তু বিরোধী নেতারা ও সমালোচকরা বলছেন, এই পরিবর্তন পাকিস্তানকে আরও গভীর সামরিক নিয়ন্ত্রণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের মতে, একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর সামরিক প্রতিষ্ঠানের প্রভাব বাড়লে গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংশোধনীতে ‘ফেডারেল সংবিধান আদালত’ (FCC) নামে একটি নতুন আদালত গঠনের বিধানও যুক্ত হয়েছে। এই আদালত সংবিধানসংক্রান্ত মামলার বিচার করবে, আর এর বিচারকদের নিয়োগে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হাতে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিচারক নিয়োগের এই ধরণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে দুই সুপ্রিম কোর্ট বিচারকের পদত্যাগের পর। বিশ্লেষকদের দাবি, এসব পদত্যাগ দেশটির বিচার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অস্বস্তি ও অনাস্থার ইঙ্গিত বহন করছে। বহু পর্যবেক্ষকের মতে, সাম্প্রতিক সংশোধনী পাকিস্তানে সামরিক–নাগরিক সম্পর্কের ভারসাম্যকে স্পষ্টভাবেই সামরিক পক্ষের দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়েছে।