17 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫

যে ৫ অভিযোগে শেখ হাসিনার মামলার রায় চলছে

জনপ্রিয়
- Advertisement -
Your Ads Here
100x100
জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থয়ের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেবেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটি প্রথম কোনো মামলার রায় যা জুলাই গণঅভ্যুত্থয়ের ঘটনাবলির বিচারিক পর্যালোচনার পথ খুলছে।
পাঁচ অভিযোগে বিচার
গত ১০ জুলাই সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি, হত্যা, নির্যাতন, অমানবিক আচরণ ও যৌথ অপরাধমূলক উদ্যোগ (জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ)–সহ মোট পাঁচটি অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। এর আগে গত ২ জুলাই আদালত অবমাননায় শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন একই ট্রাইব্যুনাল।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অভ্যুত্থানকালীন সহিংসতায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ হত্যার উস্কানি, নির্দেশ বা সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মামলায়।
অভিযোগগুলো যেভাবে সাজানো হয়েছে
১. উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে ব্যাপক হামলা
১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপিসহ উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষের ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায়’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ ব্যাপক আক্রমণে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে—এ অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করে।
২. প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ
প্রসিকিউশনের দাবি, শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইজিপি এ নির্দেশ বাস্তবায়নে সরাসরি ভূমিকা রাখেন।
৩. রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা
১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে বিনা উসকানিতে গুলি করে হত্যা—এ ঘটনাকে আসামিদের নির্দেশ ও প্ররোচনার ফল বলে অভিহিত করেছে প্রসিকিউশন।
৪. চানখাঁরপুলে ছয় জনকে গুলি করে হত্যা
৫ আগস্ট ঢাকার চানখাঁরপুলে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিতে শাহরিয়ার খান আনাসসহ ছয়জন নিহত হওয়ার পেছনে আসামিদের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র ছিল বলে অভিযোগ।
৫. আশুলিয়ায় গুলি ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা
৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় শিক্ষার্থীকে গুলি করে নিহত করা হয়। এরপর পাঁচজনের মৃতদেহ, এবং একজন গুরুতর আহত অবস্থায় জীবিতকেও আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়—যা অমানবিক আচরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে অন্তর্ভুক্ত।
সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন
এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন—
  • প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পরিবার,
  • স্বজনহারা ভুক্তভোগীরা,
  • রাজনৈতিক বিশ্লেষক বদরুদ্দীন উমর,
  • জুলাই আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম,
  • সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষী।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার অডিও নির্দেশনাসহ ভিডিও–ডকুমেন্টারি প্রমাণ পেশ করা হয়েছে।
আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড, আমৃত্যু কারাদণ্ড, যাবজ্জীবন, অথবা আরও কম মেয়াদের সাজা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম জানান, “অপরাধের গভীরতা ও সম্পৃক্ততার মাত্রা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল যেকোনো শাস্তির রায় দিতে পারেন।”

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ

মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ড: ঘটনার ৬০ ঘণ্টা পর গৃহকর্মী আয়েশা ও তার স্বামী গ্রেপ্তার

ঢাকার মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে মা লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল (১৫) হত্যাকাণ্ডের প্রায় আড়াই দিন পর গৃহকর্মী...